পুরান কথা – শিব কেনো বাঘছাল পরেন

639

আমরা প্রত্যেকেই দেবাদিদেব মহাদেবকে বাঘ-ছাল পরিহিত বেশে দেখি এমনকি তিনি যখন ধ্যানমগ্ন থাকেন, তখন সেই বাঘ-ছালের উপর বসেই ধ্যান করেন।শিব কেনো বাঘ ছাল পরেন এবং কোথাথেকে তিনি এই বাঘ ছাল পেলেন তা নিয়ে একটি জশ্রুতি প্রচলিত আছে|আজ সেই ঘটনা আপনাদের বলবো|শিব হলেন সর্ব ত্যাগী সন্ন্যাসী যিনি কখনো কৈলাসে ধ্যান মগ্ন আবার তিনি দুর্গম বনে জঙ্গলে বিচরন করে বেড়ান আপন খেয়ালে |শিব একবার হাঁটতে হাঁটতে এক বনে গিয়েছিলেন। সেই বনে কয়েকজন ঋষি তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করতো। তিনি যখন বনে জঙ্গলে ঘোরাফেরা করছিলেন তার পরনে কোনও পোশাক ছিল না। তার সৌম কান্তি রূপ ও দিব্য জ্যোতি দেখে স্থানীয় মানুষ, পশু পাখি এমন কি প্রকৃতি তার দিকে আকর্ষিত হতে থাকে|সেই বনে বসবাস কারী ঋষি ও সাধুরা এতে ঈর্ষা ও ক্রোধ অনুভব করে এবং তারা শিবকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন|আসলে তারা শিব কে তখনো চিনতে পারেননি এবং পরিকল্পনা অনুসারে, ওইসব ঋষিরা শিবের ভ্রমণের পথে একটা বড় গর্ত খুঁড়লেন এবং তাতে একটি বাঘও ছেড়ে রাখলেন।লক্ষ ছিলো বাঘ কে দিয়ে শিব কে হত্যা করা|শিবের অসীম শক্তি সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা ছিল না। শিব ওই গর্তে প্রবেশ করলেন এবং তৎক্ষণাৎ বাঘটিকে হত্যা করে বাঘের ছাল ছড়িয়ে পরিধান করলেন। তখন ঋষিরা সেই ঘটনা দেখে আশ্চর্য হয়ে পরেন তারা বুঝতে পারেন তিনি কোন সাধারণ মানুষ নন স্বয়ং শিব সঙ্গে সঙ্গে তারা মহাদেবের চরণে লুটিয়ে পড়েন আশির্বাদ নিতে ও ক্ষমা চাইতে|শিব তাদের ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহন করলেন ও মাফ করে দিলেন|সেই থেকেই তিনি কেবলমাত্র বাঘের ছাল পড়ে থাকেন।শিবের পোশাক বাঘছাল আসলে ত্যাগ, বীরত্ব সহ শৌর্যর প্রতীক|শিব আদি যোগী এবং এবং সর্ব শক্তিমান তাই তার এই পোশাক যথেষ্ট মানান সই|আগামী পর্বে অন্য কোনো পৌরাণিক বিষয় এবং তার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা নিয়ে আবার ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|