শ্রদ্ধার্ঘ্য কবিগুরুর চরনে

391

আজ বাইশে শ্রাবন অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়ান দিবস|বাঙালিরা পৃথিবীরা যে প্রান্তেই থাকুক দুটি তারিখ তারা কখনোই ভুলতে পারেনা এক পঁচিশে বৈশাখ এবং তারপর এই বাইশে শ্রাবন|মানে বিশ্বকবির আগমন ও তার বিদায়আজকের দিনটি তাকে স্মরণ করার দিন, তাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়ার দিন আর এই কাজ টা সাধারনত করা হয় তার গানের মাধ্যমে|তার কবিতার মাধ্যমে এবং তার জীবন দর্শন ও কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনারা মাধ্যমে|আজ আসুন ফিরে দেখি কবিগুরুর শেষের কয়েকটি দিন|সেদিন 30 এ জুলাই বেলা ১১টায় স্ট্রেচারে করে জোড়াসাঁকোর অস্থায়ী অপারেশন-টেবিলে আনা হলো কবিকে। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অপারেশন শুরু হলো|দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে শেষ হলো অস্ত্রোপচার। তখন ও সব ঠিক ছিলো|কবি রসিকতা করলেন, ‘খুব মজা, না?’শরীরে যথেষ্ট যন্ত্রণা হয়েছিল অপারেশনের সময়। কিন্তু তা বুঝতে দেননি কবি। সেদিন ঘুমালেন। পরদিন ৩১ জুলাই যন্ত্রণা বাড়ল। জ্বর বাড়ছে। নিঃসাড় হয়ে আছেন। ১ আগস্ট কথা বলছেন না কবি শুধু সামান্য জল ও ফলের রস খাওয়ানো হচ্ছে তাঁকে। চিকিৎসকেরা শঙ্কিত।পরদিন ২ আগস্ট কিছু খেতে চাইলেন না কবি|পরিস্থিতি ক্রমশঃ খারাপ হচ্ছে, পরদিন ৪ আগস্ট সকালে জ্বর বাড়ল। ডা. নীলরতন ৫ আগস্ট ডাক্তার বিধান রায়কে নিয়ে এলেন। রাতে স্যালাইন দেওয়া হলো কবিকে। অক্সিজেন আনিয়ে রাখা হলো।পরদিন ৬ আগস্ট বাড়িতে উৎসুক মানুষের ভিড়। রাত ১২টার দিকে আরও অবনতি হলো কবির শরীরের।সেই বছর ৭ আগস্ট ছিল ২২ শ্রাবণ। কবিকে সকাল নয়টার দিকে অক্সিজেন দেওয়া হলো। নিশ্বাস ধীরে ধীরে ক্ষীণ হতে থাকল কবির। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে তা একেবারে থেমে গেল।নিজের প্ৰিয় বর্ষা ঋতুতেই বিদায় নিলেন কবি|রেখে গেলেন তার অসংখ্য সৃষ্টি ও আদৰ্শ যা আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে|যদিও ব্যাক্তিগত ভাবে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন আত্মার অমর তার সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই,তিনি সকল ধর্মীয় গোড়ামির উর্ধে ছিলেন আবার ধ্যান ও প্রার্থনা সংগীত কে গুরুত্ব দিতেন |তিনি নির্দ্বিধায় বলতে পারতেন -“তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছো আকীর্ণ করি বিচিত্র ছলনা জলে করি হে ছলনা ময়ী “বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ নাথ কে নিয়ে, তার সৃষ্টি কে নিয়ে গবেষণা চলছে, চলবে |আগামী দিনে হয়তো তাকে নিয়ে আরো নতুন নতুন তথ্য সামনে আসবে|ততদিন তার সৃষ্টিরা মধ্যে দিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়ার এই প্রচেষ্টা চলতে থাকুক|প্রয়ান দিবসে গুরুদেবের চরনে রইলো প্রনাম ও শ্রদ্ধাঞ্জলি|রবীন্দ্রনাথ পড়ুন|রবীন্দ্রনাথকে চিনুন|ভালো থাকুন| ধন্যবাদ|