মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র হয়তো অনেকেই শুনেছেন এই মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র কি এবং কেনো এত শক্তিশালী তা জানতে হলে জানতে হবে এক পৌরাণিক ঘটনা|শিবের পরম ভক্ত ছিলেন শ্রীখণ্ড ঋষি। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান|সন্তানলাভের উদ্দেশ্য তিনি মহাদেবের আরাধনা শুরু করেন। শ্রীখণ্ডের প্রচণ্ড তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেব তাকে সন্তানসুখ দান করেন |কিন্তু এই আনন্দের সঙ্গে তাঁর জীবনে শোকও আসবে বলে জানান শিব। এরপর মার্কণ্ডেয় নামে শ্রীখণ্ডের একটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু তাঁর ভাগ্য গণনা করে ঋষি দেখেন যে অসাধারণ প্রতিভাধর এই সন্তানের আয়ু মাত্র বারো বছর পর্যন্ত। মার্কণ্ডেয় ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল। তাঁর মা ছেলের মৃত্যুর সময় এগিয়ে আসছে এই ভেবে সব সময় শোকে কাতর হয়ে থাকতেন।শ্রীখণ্ড তাঁর স্ত্রীকে এই বলে স্বান্তনা দেন, যে ভগবান মার্কণ্ডেয়কে তাঁদের কোলে দিয়েছেন, তিনিই তাঁকে রক্ষা করবেন।মাকে খুশি করার জন্য মার্কণ্ডেয় ঠিক করলেন যে মহাদেবের কাছ থেকে তাঁকে দীর্ঘ জীবনের বর লাভ করতে হবে। শিবের আরাধনার জন্য মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র রচনা করলেন মার্কণ্ডেয় এবং শিব মন্দিরে বসে টানা এই মন্ত্র পাঠ করতে লাগলেন তিনি।বারো বছর সম্পূর্ণ হলে যমদূতেরা তাঁকে নিতে এল। মার্কণ্ডেয়কে মহাকালের আরাধনা করতে দেখে তারা তাঁর ধ্যান ভঙ্গ করার সাহস পায় না এবং যমরাজের কাছে ফিরে যায়। তখন যমরাজ নিজে মার্কণ্ডেয়কে নিতে আসেন। যম মার্কণ্ডেয় টানতে টানতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি শিবলিঙ্গকে জড়িয়ে ধরেন। তখন প্রচণ্ড আওয়াজ ও আলোর চ্ছটায় কেঁপে ওঠে মন্দির। শিবলিঙ্গ থেকে আত্মপ্রকাশ করেন স্বয়ং মহাদেব।যমের দিকে ত্রিশুল উঁচিয়ে তিনি জিজ্ঞেস করেন যে তাঁর ধ্যানে মগ্ন ভক্তকে তিনি টেনে নিয়ে যাওয়ার সাহস কোথা থেকে পান? মার্কণ্ডেয়কে এরপর দীর্ঘ জীবনের আশীর্বাদ দেন শিব। তখন যম জানান যে এরপর থেকে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র যিনি জপ করবেন, তাঁকে অকালে মৃত্যু স্পর্শ করবে না।মহা মৃত্ত্যুঞ্জয় মন্ত্র তাই এতো শক্তিশালী ও প্রভাবশালী|চলবে পুরান কথা|আবার আগামী পর্বে এমন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|