কালীতীর্থ – জয় কালী

967

আজ কালীক্ষেত্র পর্বে শ্যামবাজারের জয়কালী বাড়ির কথা লিখবো|এই কালী মন্দিরের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে নানা অলৌকিক ঘটনা ও অদ্ভুত সব জশ্রুতি|শাস্ত্র মতে পুজোয় ডিম ব্যবহার হয়না,কিন্তু এই মন্দিরে নিজের পুজোয় ডিমও নিয়েছেন দেবী জয়কালি। অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই সত্যি। কি করে শুরু হলো ডিম দিয়ে পুজোর তা নিয়েও এক ঘটনা আছে শোনা যায় বহুকাল আগে পরিবারের সদস্যরা এক বিকাল বেলা নিজেদের মধ্যেই আলচনা করছিলেন আলোচনার বিষয় ছিল ঠাকুরের খাবার।” ঠাকুরের খাবারের জন্য মিষ্টি , ফল এসব দিয়ে পুজো দিয়ে যায়। আবার ঠাকুরের মাছ, মাংস ভোগ হিসাবে নিবেদন করার রীতিও রয়েছে। কিন্তু সেদিন তাঁরা আলোচনা করছিলেন কেউ যদি এই পুজোর উদ্দেশ্যে ফল , মিষ্টির জায়গায় ডিম দেয় তখন কি হবে? ঠাকুর কি তা গ্রহন করবেন ? মিতা চৌধুরী জানিয়েছেন।, “অদ্ভুত ভাবে কিছুক্ষণ পরেই একজন মন্দিরে পুজো দিতে আসেন ডিম নিয়ে।” ডিম দিয়ে পুজো শুনেই সবাই নাকচ করে দেন। অনেকে আবার কিছুটা ভয়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভক্ত নাছোড়বান্দা ছিলেন। কিছুতেই তিনি না পুজো দিয়ে ফিরে যাবেন না। আর পুজো দিলে তিনি দেবেন ওই ডিম দিয়েই। কারন তিনি সম্প্রতি ডিমের ব্যবসা শুরু করেছেন এবং তিনি ঠিক করেছেন ব্যবসা শুরুর আগে মা’কে পুজো দেবেন। আর যেহেতু তিনি ডিমের ব্যবসায়ী তাঁর বিশ্বাস ওই ডিম দিয়ে পুজো অর্পণ করলেই দেবী খুশি হবেন। ব্যবসায় উন্নতি হবে তাঁর। শেষে ডিম দিয়েই পুজো হয় তবে ওই ব্যবসায়ী একবারের জন্যও মন্দিরে প্রবেশ করেননি। বাইরে থেকেই পুজো নিয়ে চলে গিয়েছিলেন।সেই থেকে ডিম দিয়ে পুজোর প্রচলন হয়|মন্দির নির্মাণের সাথেও জড়িত আছে অলৌকিক এক ঘটনা|সাড়ে তিনশো বছর আগে এই পরিবারের পরিবারেরই এক সদস্য গঙ্গার স্নান করার পথে এই মূর্তিকে দেখেন। তিনি সেখানে মা’কে প্রনাম করে বারি চলে যান। সেদিনই তিনি স্বপ্নাদেশ পান যে মা চাইছেন তিনিই তাঁর পুজো করুন। সেই শুরু হয় জয়কালির আরাধনা। জঙ্গলে ভরা তৎকালীন কলকাতার থেকে সাড়ে তিনশো পেরিয়ে বর্তমানে নগর সভ্যতার সাক্ষী দেবী জয়কালি। অবিশ্বাস্য হলেও অত বছর আগে পাওয়া একটি মাটির মূর্তি এখনও অবিকল একরকম থেকে গিয়েছে।আগামী পর্বে অন্য কোনো কালী মন্দিরের কথা নিয়ে আবার ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন কালী তীর্থ |