স্বামী বিবেকানন্দের মহা প্রয়ান দিবস

868

একবার স্বামীজি অমরনাথ দর্শনের পরে নিবেদিতাকে আভাস দিয়েই রেখেছিলেন, মহাদেব-কৃপায় তিনি ইচ্ছামৃত্যুর বর পেয়েছেন। যার নিহিত অর্থ হল, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত না হলে তাঁর দেহত্যাগ হবে না।

4 জুলাই স্বামীজির মহাপ্রয়াণ ঘটে এবং পরদিন ৫ জুলাই, শনিবার। তখন ভগিনী নিবেদিতার ঠিকানা ১৬ নন্বর বাগবাজার লেন। সকাল ৯টা নাগাদ বেলুড় মঠ থেকে একটা ছোট চিঠি পান স্বামী সারদানন্দজি স্বাক্ষরিত নিম্নলিখিত বয়ানে-‘-‘মাই ডিয়ার নিবেদিতা, দ্য এন্ড হ্যাজ কাম, স্বামীজি হ্যাজ স্লেপ্ট লাস্ট নাইট অ্যাট নাইন ও’ক্লক। নেভার টু রাইজ এগেন- সারদানন্দ’’।

কালবিলম্ব না করেই বেলুড় থেকে আসা পত্রবাহকের সঙ্গেই রওনা হলেন বেলুড় মঠ|
বেলুড় মঠে পৌঁছেই নিবেদিতা সোজা উঠে গেলেন দোতলায় স্বামীজির ঘরের দিকে। স্বামীজির দেহটি মেঝেতে শায়িত হলুদ রঙের ফুলমালা আচ্ছাদিত হয়ে। মানসকন্যা স্বামীজির শিয়রের কাছে বসে পড়েন।এই মুহূর্ত থেকে স্বামীজীর দেহ পঞ্চভুতে বিলীন হয়ে যাওয়ার মুহূর্ত অবধি নিবেদিত স্বামীজীকে চোখের আড়াল করেননি|

স্বামীজির শেষকৃত্য সমাপনের নির্দিষ্ট স্থানে, যে স্থান বিবেকানন্দ নিজেই চিহ্নিত করেছিলেন মহাপ্রয়াণের কিছু দিন আগে, স্থানটি ছিলো তাঁর প্রিয় বেলগাছের কাছে এর উল্টো দিকেই |সেখানেই শেষ হলো শেষ কৃত্য|পরবর্তীতে এই খানে গড়ে ওঠে স্বামীজীর একটি মন্দির|

দাহ কার্য যখন চলছে দুরে বসে আছেন নিবেদিতা হটাৎ চিতাগ্নি থেকে একখণ্ড গেরুয়া বস্ত্র হাওয়ায় উড়ে এসে নিবেদিতার কোলে গিয়ে পড়ে। পরম মমতায় ও যত্নে নিবেদিতা তা গুরুর আশীর্বাদ ভেবে মাথায় ঠেকান। সেই পবিত্র স্পর্শ যেন শোকস্তব্ধ হৃদয়ে সান্ত্বনা ও শক্তি জোগায়|

আজ এই মহান সন্ন্যাসীর প্রয়ান দিবসে তার চরনে রইলো শতকোটি প্রনাম|