দেবতাদের অস্ত্রশস্ত্র – গদা

870

দেবতাদের অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে এই ধারাবাহিক লেখনীতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ও বহুচর্চিত অস্ত্র নিয়ে লিখেছি, আজ আমাদের প্রাচীন ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অস্ত্র গদা নিয়ে লিখবো|

রামায়ন থেকে মহাভারত, পৌরাণিক যুগের প্রায় প্রতিটি বড়ো যুদ্ধতে বাবহিত হয়েছে এই গদা|গদা একেবারেই ভারতীয় প্রযুক্তি এবং ভারতীয় সভ্যতার দান, সমসাময়িক আর কোনো সভ্যতায় অস্ত্র হিসেবে গদার উল্লেখ নেই বললেই চলে|

গদা সব থেকে বেশি যার হাতে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো তিনি পবন পুত্র হনুমান|গদা ও বজ্রবলীর সম্পর্ক শৈশব থেকে|শৈশব থেকে কাকা বালি তাকে হত্যা করতে চাইতেন, একবার ছলনা করে বালি তাকে পাতাল পুরীতে কুবের দেবের লুকিয়ে রাখা গদা আনতে পাঠিয়েছিলেন কারন বালি জানতেন ওই গদা স্পর্শ করলে মৃত্যু অনিবার্য|কিন্তু রূদ্র অবতার হনুমান অনায়াসে সেই গদা উদ্ধার করেন|পরবর্তীতে রাবনের সাথে যুদ্ধে হনুমানের পাশাপাশি গোটা বানর সেনার প্রধান হাতিয়ার ছিলো গদা|

বজ্রবলীর পাশাপাশি , গদা ভগবান বিষ্ণু, ভগবান কৃষ্ণ,মা দূর্গা এবং পাণ্ডব ভীমের মতো প্রক্রমনশালীদের হাতে দেখতে পাওয়া যায়। হিন্দু ধর্মগন্থ অনুসারে এই গদা ধারণ করার জন্য ক্ৰোধ, লোভ, অহংকার, বাসনা ও মায়া এই ৫ বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা খুবই প্রয়োজন তাই গদার ব্যবহার সবার দ্বারা সম্ভব নয়|

আধুনিক বাস্তু শাস্ত্রে এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রেও গদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে|মনে করা হয় গৃহ মন্দিরে অথবা দেবতার সিংহাসনে গদা স্থাপন করলে বাস্তু দোষ দূর হয়, লকেট আকারে গদা ধারন করলেও কিছু গ্রহগত কুপ্রভাব দূর হয় বলে অনেকে মনে করেন|

প্রাচীন ভারতে গদাকে শুধু একটা অস্ত্র হিসেবেই নয় সাথে সাথে স্বঅভিমান বোধ, শাসন করার অধিকার ও শাসন করার শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হতো।এই বর্তমান যুগেও এই বিষয়টিকে কিছুটা মেনে চলা হয় এবং একটি প্রাচীন রীতি অনুসরণ করে আজও শাসন ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে আমাদের বিধানসভায় গদা রাখা হয়|

আবার পরের পর্বে নতুন কোনো অস্ত্রর কথা আসবো আপনাদের সামনে, সামনেই রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ অমাবস্যা তিথি এবং তারপর রথযাত্রা|তাৎপর্যপূর্ণ এই সময়ে নিজের ভাগ্যবিচার বা গ্রহগত দোষ খণ্ডনের কথা ভেবে থাকলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|