বাংলার কালী – রমনা কালী মন্দির

608

আর কিছুকাল পরেই ফল হারিনী অমাবস্যা|জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তিথি গুলির অন্যতম|এই সময় প্রতি বছর পেশাগত ব্যাস্ততা তুঙ্গে থাকে, এবছর ও ব্যাতিক্রম নয়, তবে কাজের ধরণ পাল্টেছে,এখন দিনের বেশি ভাগ সময় কাটে অনলাইনে,ফোনে বা ভিডিও কলে ভাগ্যগণনা করে|আর তার ফাঁকে যেটুকু অবসর তা পড়াশোনা, মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা পূজার্চনা এবং লেখা লেখি করেই কাটে|আজ লিখবো ওপার বাংলা তথা এই উপমহাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ কালী মন্দির গুলির একটি, রমনা কালী মন্দির নিয়ে|

বাংলা দেশের ঢাকায় অবস্থিত রমনা কালী মন্দির যে ঠিক কতো পুরোনো এবং ঠিক কে ও কবে স্থাপন করেছিলেন তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল|এই মন্দির নতুন করে প্রচারে আসে ব্রিটিশ আমলে কারন ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি আবার নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল|স্থানীয় অঞ্চলের নাম থেকেই মন্দিরের নামকরণ|

এই মন্দিরের সংগে দুটি নাম ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে, এক বদরীনাথের যোশীমঠ থেকে গোপালগিরি নামে এক উচ্চমার্গের সন্ন্যাসী ও দ্বিতীয় ভাওয়ালের ভক্তিমতী ও দানশীলা রানি বিলাসমণি দেবী|কথিত আছে ঢাকায় এসে সাধন ভজনের জন্য উপযুক্ত একটি আখড়া হিসাবে এই মন্দির গড়ে তোলেন।পরবর্তীতে তার অবর্তমানে তৎকালীন কালীমন্দিরটির সংস্কার করেন আর এক সাধু হরিচরণ গিরি|পরবর্তী সময়ে এই মন্দিরের প্রধান সংস্কারকার্য ভাওয়ালের রানি বিলাসমণি দেবীর আমলেই হয় তিনি ছিলেন অত্যান্ত ভক্তিমতি ও দানশীলা|

এই মন্দিরের ইতিহাসের সাথে জড়িত আছে বাংলা দেশের মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস|যুদ্ধে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই মন্দির|শোনা যায় এককালে একশো কুড়ি ফুট উচ্চতা ছিলো এই মন্দিরের চুড়ো যা বহু দূর থেকে দেখা যেতো|যুদ্ধের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই স্থাপত্য|পরবর্তীতে অবশ্য ভক্ত দের চেষ্টায় ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় মন্দির সংস্কার করে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দেয়া হয়|

বর্তমানে জগৎ প্রসিদ্ধ কালী মূর্তি ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো, দুর্গা মন্দির ও রাধা মাধব মন্দির|মূল কালী মন্দিরে পাথরের বেদির ওপর বিরাজিত রয়েছে শ্রীশ্রী ভদ্রকালীর সুউচ্চ প্রতিমা|দেবীর রূপ চতুর্ভুজা তিনি মহাদেবের শয়ান মূর্তির ওপর দণ্ডায়মান এবং তার দু’পাশে রয়েছে ডাকিনী ও যোগিনী|

প্রতিটি বিশেষ তিথিতেই এখানে বিশেষ পুজো হয় যা দেখতে ও দেবীর আশীর্বাদ নিতে আসেন দেশ বিদেশের বহু মানুষ|আজ বিদায় নিলাম|ফিরবো পরের পর্বে|যারা আমার সাথে জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বা বাস্তু বিষয়ে আলোচনা ও পরামর্শর জন্যে যোগাযোগ করছেন বা করতে চান উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করে কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|