জগন্নাদেব এবং ভক্ত রঘুদাস

92

জগন্নাদেব এবং ভক্ত রঘুদাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

একসময় পুরীধামে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের একজন মহান ভক্ত ছিল।তার নাম ছিলো রঘু দাস।

এই ভক্ত রঘু দাসকে বিশেষ স্নেহ করতেন জগন্নাথদেব। আজকের পর্বে ভক্ত রঘু দাসের জীবনে ঘটা দুটি অলৌকিক ঘটনা আপনাদের জানাবো।

 

একবার পুরীর ভক্ত রঘুদাস পুরীর মন্দিরের বিগ্রহবেদীতে রাম, লক্ষ্মণ ও সীতাদেবীর দর্শন পান এবং উপলব্ধি করেন যে শ্রীজগন্নাথ এবং শ্রীরামচন্দ্র এক এবং অভিন্ন।তারপর থেকে সে জগন্নাথকে শ্রী রাম জ্ঞানেই পুজো করতো।

একবার রঘু শ্রীজগন্নাথের জন্য একটি সুন্দর মালা গেঁথে জগন্নাথকে দেয়ার জন্য পূজারীকে দেয়।কিন্তু পূজারী সেটি ভগবানকে দিতে চাইলেন না কারন মালাটি ছিলো অতি সাধারণ এবং সস্তা।

তাঁর মালাটি জগন্নাথকে দেয়া হল না দেখে রঘু অত্যন্ত দুঃখিত, বিমর্ষ হয়ে মন্দির ত্যাগ করে।

 

সেই রাতে ভগবান শয়নে যাওয়ার পূর্বে জগন্নাথের বড়-শৃঙ্গার বেশের সময় ভগবান কোনও ফুলই গ্রহণ করলেন না। পূজারীরা বুঝলেন যে তারা নিশ্চয়ই কোন গর্হিত অপরাধ করেছেন।

সেই রাত্রেই জগন্নাথ প্রধান পূজারীর নিকট স্বপ্নে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “আমার ভক্ত রঘু দাস আমার জন্য একটি ফুলের মালা এনেছিল। সে কত ভক্তি ও প্রীতি সহকারে সেটি গেঁথেছিল! তুমি কেবল বাইরে থেকে সূতোটি দেখে তাঁকে ফিরিয়েছ,আমাকে মালা অর্পণ করার অনুমোদন দেওনি। আমার ভক্তের ইচ্ছাপূরণ হয়নি তাই আমিও বড় শৃঙ্গার ত্যাগ করেছি।

 

তৎক্ষণাৎ পূজারীরা ভক্ত রঘুদাসের কাছে গিয়ে তাদের অপরাধ স্বীকার করলেন এবং শ্রীজগন্নাথদেবকে তাঁর মালা অর্পণ করতে বললেন। রঘু দাস অত্যন্ত খুশি হল এই শুনে যে, ভগবান এতই করুণাময় যে, তিনি স্বয়ং তাঁর মালা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং তার ইচ্ছে আজ পূরণ করবেন।

 

প্রভু জগন্নাথ পরম করুনাময়। শুধু ভাব এবং ভক্তি দিয়েই তাকে সন্তুষ্ট করা যায়। আবার পরের পর্বে জগন্নাথের অন্য একটি লীলা নিয়ে ফিরে আসবো।

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।