দোল পূর্ণিমার পৌরাণিক ব্যাখ্যা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ পবিত্র দোল পূর্ণিমা। বর্তমানে দোল একটি সামাজিক আনন্দ উৎসব রূপে পালিত হলেও আসলে দোল পূর্ণিমা কিন্তু একটি পৌরাণিক বা শাস্ত্রীয় উৎসব কারন এই উৎসবের সূচনা করে ছিলেন স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ।আজ জানাবো সেই পৌরাণিক ব্যাখ্যা।
শাস্ত্র মতে বসন্তের পূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি নামক অসুরকে বধ করেন।
আবার কিছু শাস্ত্রে অরিষ্টাসুর নামক অসুর বধের কথাও আছে। অন্যায়কারী, অত্যাচারী এই অসুরকে বধ করার পর তার রক্ত ছিটিয়ে সকলে আনন্দ করে। এই অশুভ শক্তিকে ধ্বংসের আনন্দ মহানন্দে পরিণত হয়।সেই উৎসবই পরবর্তীতে রঙের উৎসব হয়ে ওঠে
আবার দৈত্যরাজ হিরণ্যকিশপুর কাহিনি আমরা সকলে জানি। ভক্ত প্রহ্লাদ অসুর বংশে জন্ম নিয়েও পরম ধার্মিক ছিলেন। তাঁকে যখন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও হত্যা করা যাচ্ছিল না তখন হিরণ্যকিশপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ হোলিকা এই বর পেয়েছিল যে আগুনে তার কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু অন্যায় কাজে শক্তি প্রয়োগ করায় এবং বিষ্ণু ভক্তকে হত্যার অপরাধে হোলিকা প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করলে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।প্রহ্লাদ অক্ষত থাকেন এই ঘটনার জন্য এই দিনটি আনন্দ উৎসবে
পরিণত হয়।
বাংলায় যেদিন দোল পূর্ণিমা পালিত হয় তার আগের দিন সারা দেশে পালিত হয় হোলি। আবার বাংলার কোথাও কোথাও ওই দিন আগুন জ্বালানোর রীতি ও আছে যা অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করার প্রতীক।
আবার বাঙালি তথা হিন্দু সমাজের অন্যতম মহাপুরুষ শ্রীচৈতন্যের জন্মতিথি হচ্ছে এই পূর্ণিমা তিথি তথা হোলি তিথি। এই মহান পুরুষের জন্ম উৎসবের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ ও পরবর্তীতে ইস্কন এই দোল উৎসবকে আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করেছে|আজ প্রায় সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়
দোল উৎসব।
সবাইকে আমার তরফ থেকে দোল যাত্রার অসংখ্য শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। শাস্ত্রীয় এবং পৌরাণিক বিষয় নিয়ে আলোচনা চলতে থাকবে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।