পুরান এবং নবগ্রহ – চন্দ্রদেব 

35

পুরান এবং নবগ্রহ – চন্দ্রদেব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

পুরান অনুসারে নয়টি গ্রহের আলাদা সত্ত্বা রয়েছে, কেউ দেবতা, কেউ দেবতা দের গুরু কেউ আবার অসুর|আজকের পর্ব চন্দ্রদেব কে নিয়ে|

 

ঠিক সূর্যদেবের মতো চন্দ্রদেব ও একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রহ এবং পাশাপাশি তিনি সনাতন ধর্মের এক বৈদিক দেবতা হিসেবেও বেদে এবং পুরানে উল্লেখিত|বহু পৌরাণিক ঘটনা ও কিংবদন্তী প্রচলিত আছে চন্দ্রদেবকে নিয়ে।

 

শাস্ত্রে চন্দ্রের জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে সেই ভাবে বিস্তারিত আলোচনা না থাকলেও স্পষ্ট করে উল্লেখিত আছে যে চন্দ্র ব্রহ্মদেবের মানস পুত্র এবং ঋষি অত্রির পুত্রদের একজন|

চন্দ্র সাতাশটি নক্ষত্রের স্বামী এবং তিনি বুধগ্রহের পিতা আবার দক্ষের জামাতা।

 

পুরান অনুসারে চন্দ্র দেবগুরু বৃহস্পতির পত্নী তারার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে প্রেম নিবেদন করেন ও বিবাহের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি গুরুপত্নী তাই বিবাহের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু চন্দ্রের ভালোবাসার কাছে আত্মসমর্পণ করেন তারা এবং তাদের মধ্যে এক বিবাহ বহির্ভুত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে|পরবর্তীতে চন্দ্রের এবং তারার পুত্রের নাম বুধ|অর্থাৎ বুধ ও চন্দ্রের পিতা পুত্রের সম্পর্ক।

 

সমুদ্র মন্থন কালে অসুরদের অমৃত পানে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় চন্দ্র এবং সূর্য যার ফল স্বরূপ আজও নিদ্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চন্দ্রগ্রহনের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয় রাহু ও কেতু|যদিও এ এক দর্শন, হাজার হাজার বছর ধরে প্রচলিত এক কিংবদন্তী যার সাথে জড়িত অসংখ্য মানুষের বিশ্বাস|

 

বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্রে চন্দ্র যে নক্ষত্রে অবস্থান করে সেই নক্ষত্রর ফলপ্রাপ্ত হয়|চন্দ্র মনকে নির্দেশ করে,মানসিক শান্তি, মানসিক স্থিরতা, ধৈর্য, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা সবই চন্দ্রের উপর নির্ভরশীল|জন্মছকে চন্দ্র অশুভ হলে,মানসিক অশান্তি, অস্থিরতা, অবসাদ, দুশ্চিন্তা জাতক জাতিকার জীবনের নিত্য সঙ্গী হয়ে ওঠে|চন্দ্র যখন রাহু বা কেতু যুক্ত হয় তখন আমরা তাকে গ্রহণ দোষ বলি|আবার চন্দ্রর অবস্থানের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় অশুভ কেমদ্রুম দোষ|আবার চন্দ্রের সাথে শুভ গ্রহের সংযোগে সৃষ্টি হয়ে গজকেশরী যোগ, জীব যোগ বা লক্ষী যোগ|চন্দ্র আবার মাতৃ কারক গ্রহ|চন্দ জন্ম কালীন সময়ে যে রাশি তে অবস্থান করে সেটাই জাতক বা জাতিকার জন্ম রাশি|

 

জ্যোতিষ শাস্ত্রে চন্দ্রের অবস্থান কে বিচার করে চন্দ্র কুন্ডলী নির্মাণ হয়। চন্দ্রের উপর নির্ভর করে একজন জাতক বা জাতিকার ভবিষ্যত জীবনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

আবার আগামী পর্বে ফিরে আসবো নবগ্রহ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনায়। থাকবে নানা

পৌরাণিক ঘটনা। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।