বাংলার শিব – জল্পেশ শিব মন্দিরের ইতিহাস
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাংলার শিব পর্বে আজ উত্তর বঙ্গের বিখ্যাত এক শিব তীর্থর কথা উল্লেখ করবো|আজকের পর্বে বিখ্যাত জল্পেশ শিব মন্দির।
পশ্চিম বঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র হল জল্পেশ মন্দির।এই মন্দিরের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে।কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণের বাবা বিশ্ব সিংহ ১৫২৪ সালে প্রথম এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।১৫৬৩ সালে মন্দিরটি পুনর্নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ১৬৬৩ সালে রাজা প্রাণ নারায়ণও একবার মন্দিরটি নতুন করে গড়ে তোলেন।
জল্পেশ মন্দির প্রসঙ্গে একটি ভিন্ন তত্ত্বর অস্তিত্ব রয়েছে|কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন|জল্পেশ নামে কোনো এক প্রতাপশালী রাজবংশী ক্ষত্রিয় রাজা অথবা সর্দার এই অঞ্চলে এককালে শাসন করতেন । তাঁর নাম অনুসারে মন্দিরের নাম হয়েছে জল্পেশ।অনেকে মনে করেন হয়ত তিনি কোনো দৈব শক্তির অধিকারী ছিলেন। তাই তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁকে দেবতার স্থানে উন্নীত করা হয়েছে।
আবার অনেকে ভাবেন জল্পেশ হয়ত কোনো শক্তিশালী গ্রামদেবতা বা লৌকিক দেবতা ছিলেন পরে কোচবিহারের রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় শিবের সঙ্গে একীভূত হয়ে
তিনিই উত্তরবঙ্গের প্রধান দেবতা রূপে
স্বীকৃত হয়েছেন।জল্পেশ থেকেই জলপাইগুড়ি
নাম করণ হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
তবে শাস্ত্র মতে ভ্রামরী শক্তিপিঠের ভৈরব হলেন জল্পেশ। শিব এখানে একটি গর্তের মধ্যে রয়েছেন, তাই তিনি অনাদি নামেও পরিচিত।তার আদি এবং অন্ত খুঁজে পাওয়া যায়না।
বাবা জল্পেশ্বর এর দর্শন পেতে বহু মানুষ এই স্থানে আসেন |বিশেষ করে শ্রাবন ও চৈত্র মাসে দর্শণার্থী দের ভিড় বেশি হয়। শিব রাত্রি এবং নীল ষষ্ঠীতে বিশেষ পুজো হয় এবং সব মিলিয়ে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন শিব ভক্তরা |বাবা জল্পেশ পরম দয়ালু তিনি ভক্তদের মনোস্কামনা
পূর্ণ করেন বলেই বিশ্বাস।
বাংলার শিব নিয়ে আবার পরবর্তী পর্বে
ফিরে আসবো।থাকবে এমনই তথ্য সমৃদ্ধ আলোচন। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।