বাংলার শিব – পাতালেশ্বর শিব মন্দিরের মাহাত্ম

46

বাংলার শিব – পাতালেশ্বর শিব মন্দিরের মাহাত্ম

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বাংলার প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ শিব মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম একটি শিব মন্দির হলো মুর্শিদাবাদের জাগ্রত পাতালেশ্বর শিবমন্দির।

আজকের বাংলার শিব পর্বে এই পাতালেশ্বর শিব মন্দিরের মাহাত্ম নিয়ে লিখবো।

 

একসময় নাকি এখানে একশো আটটি শিব মন্দির ছিল। তার মধ্যে এখন কেবলমাত্র এই একটি মন্দিরই টিকে আছে।এখানকার শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ। শিবলিঙ্গটি যেহেতু পাতাল থেকে মাটি ভেদ করে উঠে এসেছে তাই এখানকার শিবলিঙ্গের নাম দেওয়া হয়েছে পাতালেশ্বর। শিবলিঙ্গকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে মন্দির। প্রায় তিনশো বছর ধরে এখানে শিবের আরাধনা হয়ে আসছে।

 

এই মন্দির বহু প্রাচীন। স্থাপনার সঠিক দিন ক্ষণ নিয়ে মত পার্থক্য আছে তবে একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে এবং মন্দিরে প্রবেশের মুখে প্রায় চল্লিশ ফুট উচ্চতার একটি শিবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে। প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে সমগ্র জায়গাটি। তৈরি হয়েছে সুন্দর বাগান। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাটিগঙ্গা নদী। তা যাতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি করতে না-পারে সেজন্য বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘাট।সব। মিলিয়ের নির্মল এবং মনোরম পরিবেশ।

 

এই মন্দিরে গর্ভগৃহে প্রবেশের আগে রয়েছে ছয় ফুট লম্বা বারান্দা। গর্ভগৃহের চারপাশেই এমন বারান্দা রয়েছে। গর্ভগৃহের দেওয়ালের বাইরে রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। কোথাও রয়েছে শিব পার্বতীর মূর্তি। কোথাও বা অন্য দেবতার মূর্তি। এই সব মূর্তির পুজোও করেন ভক্তরা। বারান্দা থেকে প্রায় ১০ ফুট নীচে রয়েছে গর্ভগৃহের মেঝে ও শিবলিঙ্গ। ভক্তদের বিশ্বাস এখানে শিবের কাছে যা মানত করা হয় অথবা তাঁর কাছে হাতজোড় করে যা চাওয়া হয়, সেই সব কামনা পূরণ হয়।

 

জাগ্রত দেবাদিদেবের দর্শন পেতে সারাবছরই এখানে ভক্তদের সমাগম হয়। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা নানা প্রার্থনা নিয়ে এই মন্দিরে শিবের দর্শনে আসেন।বিশেষ করে শ্রাবন এবং চৈত্র মাসে

ভিড় হয় বেশি।

 

চৈত্র মাস জুড়ে শিব মহিমা এবং বাংলার শিব মন্দির গুলি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চলতে থাকবে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।