আউশগ্রামের সংলগ্ন অজয় নদের তীরবর্তী সেনপাহাড়ি এলাকার কৃষি প্রধান এক গ্রাম মঙ্গলপুর।এই গ্রামেই আছে এক ডাকাত কালী মন্দির। এই পুজো নিয়ে আছে এক অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ। আজকের পর্বে এই পুজো
নিয়ে লিখবো।
এই মঙ্গলপুর গ্রামে প্রাচীন বটবৃক্ষের নীচে গ্রামের ডাকাত সর্দার নলিনাক্ষ মেটে, আজ থেকে প্রায় দুশো বছর আগে খয়েরবুনি গ্রামের শ্মশান থেকে কালীকে চুরি করে এনে প্রতিষ্ঠা করেন এবং পুজো শুরু করেন।
শোনা যায় একবার মৃতদেহ পোড়াতে গিয়ে ডাকাত সর্দার নেশা করে অচৈতন্য হয়ে পরলে, তাকে ফেলে সহযাত্রীরা পালিয়ে আসে। পরে গভীর রাতে জ্ঞান ফিরতেই ডাকাত সর্দার দেখেন এক অসহায় বৃদ্ধা তার শিয়রের কাছে বসে। মাথায় হাত বুলাচ্ছেন। চমকে ওঠেন নলি ডাকাত। বৃদ্ধা তখন মা কালীর রূপ ধরে সর্দারকে দেখা দেন এবং বলেন শ্মশানে অবিহেলিত হয়ে তিনি পড়ে আছেন। নিয়মিত তার পুজো হয়না। তাকে নিয়ে গিয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করতে আদেশ করেন।
তখনই এই বট বৃক্ষের নিচে এনে মাকে প্রতিষ্ঠা করেন নলি ডাকাত । সে সময় সর্দার মায়ের পুজো করে মশাল জ্বালিয়ে ডাকাতদল নিয়ে বেরুতেন সন্ধ্যা রাতে ডাকাতি করতে আবার ফিরে এসে ভোর রাতে করতেন কালীর পুজো।
আজও এখানকার ডাকাত সর্দারের বংশধরাই
পুজোর দায়িত্ব পালন করেন।অতীতে পুজোর সময়ে সারারাত দলবেঁধে খেলা হতো লাঠি। এখনও সে রেওয়াজ বজায় রয়েছে।
এখানে পুজোর ক্ষেত্রে আরো একটি অদ্ভুত রীতি আছে।যেহেতু অতীতে ডাকাত দের ভয়ে পুরোহিত পুজো করতে আসতে চাইতেন না তাই ডাকাত সর্দার বামুন চুরি করে এনে পুজো করতো।
আজও এখানে না বলে বাড়ি থেকে বামুন
তুলে এনে কালীর পুজো করতে বাধ্য করা হয়।
এই ঘটনায় আর কোনো আতঙ্ক নেই।এই ঘটনাটি বেশ আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেন সাধারণ মানুষ।ঠাকুর মশাই ও মেনে নেন এই প্রথা এবং খুশি মনে পুজোর দায়িত্ব নেন।
আবার ফিরে আসবো বাংলার কালীর অন্য একটি পর্ব নিয়ে। যথা সময়ে। থাকবে এমন।অনেক ইতিহাস এবং অলৌকিক ঘটনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।