শক্তি পীঠ – গন্ডকী

29

শক্তি পীঠ – গন্ডকী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ যে শক্তিপীঠটি নিয়ে লিখবো তা

আমাদের প্রতিবেশী দেশ নেপালে অবস্থিত

শক্তি পীঠ গন্ডকী। এই শক্তিপীঠটি একাধারে বৌদ্ধ, শাক্ত এবং শৈব্য দের কাছে সমান ভাবে পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ।

 

পুরান অনুসারে এখানে সতীর ডান গাল অথবা গন্ডদেশ পড়েছিলো । দেবী হলেন গন্ডকী যিনি চন্ডী রূপেই পূজিতা হন এবং দেবীর ভৈরব এখানে চক্রপাণি।

 

স্থানটি আদতে একটি শৈব্য তীর্থ কারন মুক্তিনাথ শিব মন্দির রয়েছে এখানেই এবং গন্ডকী চন্ডীর মন্দির পাহাড়ের উপরে অবস্থিত।মুক্তিনাথ মন্দিরের উল্লেখ বিষ্ণু পুরানেও পাওয়া যায়।

বর্তমান মন্দিরটিও বেশ প্রাচীন তবে সুন্দর এবং অপূর্ব তার নির্মাণ শৈলী।মন্দিরের পাঁচিলে একশো আটটি পিতলের নানান জন্তুর মুখ বসানো আছে প্রতিটির মুখ থেকে অজস্র ধারায় অনবরত জল পড়ছে। এই জল শিব ভক্তদের কাছে অমৃতর ন্যায়

পবিত্র। প্রচলিত বিশ্বাস এই শক্তিপীঠ দর্শন করে এই শিব মন্দিরে পুজো দিলে এবং এই জলে স্নান করলে সব দুঃখ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি লাভ হয়।

 

পুরান অনুসারে জানা যায় যে সমুদ্র মন্থন থেকে উঠে আসা বিষ পান করে ভগবান শিবের অসহ্য জ্বালা শুরু হলে তিনি এই স্থানে এসে গন্ডকী পার্শবর্তী একটি হ্রদে স্নান করে সেই জ্বালা দূর করেন।সেই থেকে এই হ্রদের নাম নীলকন্ঠ হ্রদ।

 

তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম ধর্মগুরু রিনপোচে মুক্তিনাথে এসে ধ্যান করেছিলেন বলে বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন তাই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেও স্থান টি অতি গুরুত্বপূর্ণ।

 

সব শেষে বলবো এই গন্ডকীতেই পাওয়া যায় শালগ্রাম শীলা। পৃথিবীর অন্য কোনো নদীতে এই শালগ্রাম শীলা দেখা যায় না। এই শালগ্রামশীলা কে সাক্ষাৎ বিষ্ণু মনে করা হয়।কারন পুরান মতে কঠোর তপস্যারত বিষ্ণুর ঘাম থেকে এই

গন্ডকী নদীর সৃষ্টি হয়েছে।

 

ফিরে আসবো আগামীপর্বে অন্য একটি

শক্তিপীঠ সংক্রান্ত লেখনী নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।