সেনগুপ্ত বাড়ির দূর্গা পুজো

74

সেনগুপ্ত বাড়ির দূর্গা পুজো

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

ঝাড়গ্রামের বনেদি জমিদার পরিবার সেনগুপ্ত পরিবার। তাদের দূর্গাপুজোর ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ এবং বর্নময়। আজকের পর্বে এই প্রাচীন দুর্গাপূজা নিয়ে লিখবো।

দেশভাগের পরে সেনগুপ্ত বাড়ির বংশধররা ঝাড়গ্রামে এসে জমিদারি কিনে বসবাস শুরু করেন। তখন থেকেই ধুমধাম করে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এই জমিদার বংশের অন্যতম প্রান পুরুষ রামগতি সেনগুপ্ত ছিলেন বেশ ধনি এবং প্রভাব শালী তাঁর সময় থেকে বাড়ির দুর্গাপুজোর জাঁকজমকের শুরু। সেই জাঁকজমক আজ ম্লান হলেও চলছে সেই প্রবাহমান ঐতিহ্য।

এই বাড়ির পুজোয় একচালার মূর্তি তৈরি হয়। দুর্গার ডানদিকে লক্ষ্মী ও কার্তিক আর দুর্গার বাঁ পাশে সরস্বতী ও গণেশ থাকেন। মূর্তির পাশাপাশি পুজোর বেশ কিছু বিশেষত্ব আছে যেমন কাঁচা ভোগ এবং শত্রু বলীর রীতি।

নবাবী আমলে মারাঠা বর্গীরা যখন বাংলার জমিদার বাড়ি গুলিকে নিশানা করছে তখন অত্যন্ত গোপনে পুজোর আয়োজন করা হতো। এমনকি ভোগ রান্না করা হতো না।সেই থেকেই কাঁচা ভোগ নিবেদনের রীতি আরম্ভ হয়।
এই বাড়িতে নবমীর দিন ‘শত্রু’ বলি’ দেওয়া হয়।
অর্থাৎ প্রতীকী অর্থে বলীর আয়োজন। এও এক বিশেষত্ব।

কাঁচা ভোগে থাকে আলু ,ফুলকপি, বেগুন, মুলো, কাঁচকলার মতো অন্তত পাঁচ রকম কাঁচা আনাজ।
আর শত্রু বলিতে কচুপাতার উপরে চালের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি করা হয় মানুষের অবয়ব। তারপর সেই অবয়বকে বলি দেয়া হয় অশুভ শক্তির প্রতিক রূপে।

আজও সব রীতি নীতি বজায় রাখা হয়ে। পুজোর সময় নতুন করে সেজে ওঠে বাড়ির চন্ডী মণ্ডপ। পাড়া প্রতিবেশী সবাই যোগ দেন এই বাড়ির সেনগুপ্ত বাড়ির পুজোয়।

ফিরে আসবো এরকম একটি বনেদি বাড়ির দূর্গা পুজোর বর্ণময় ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়ে। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।