জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ সখা ভক্ত রঘুদাস
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনা পর্বে আগেই
ভক্ত রঘুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি আপনাদের। রঘু দাস শুধু ভক্ত নন তিনি ছিলেন প্রভু জগন্নাথের সখা। বাৎসল্য ভাবের একটি প্রমান আজকের পর্বে দেবো।
পুরীতে ভক্ত রঘু দাস একসময় গুরুতর অসুখে পড়ল। তাঁর স্বাস্থ্য এতই ভেঙে গেল যে, তাঁর আর বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াবার শক্তি ছিলোনা।প্রায় মৃত্যু সজ্জায় রঘু দাস রোগ-পীড়ায় কাতর হয়ে ঘন ঘন অচৈতন্য হয়ে পড়ছিল। এ অবস্থায় তাঁর নিজেকে সাহায্য করার কোনও ক্ষমতা ছিল না।
তিনি একা থাকতেন এবং জগন্নাথ প্রেমেই দিন কাটাতেন।সঙ্গী সাথী তেমন ছিলোনা। তাই এই খবরও কেউ পায়নি।
সেসময় একদিন একটি ছোট বালক রঘু দাসের সেবা করতে এল। বালকটি রঘুর অসুস্থ্য দেহ, বিছানা, কুটির সবকিছু পরিষ্কার করল। তাঁর দেহ সে চন্দনে প্রলিপ্ত করল এবং ঘরে সুগন্ধিত দ্রব্য দিয়ে ঘরের দুর্গন্ধ দূর করে ঘরকে শুদ্ধ করলো।
তারপর শুরু হলো রোগীর সেবা।
রঘুর যখন একটু সুস্থ্য হলো তখন সে দেখল একটি বালক তার সেবা করছে । পরিচয় জিগেস করলে বালক জগন্নাথ রূপে দর্শন দিলেন। অশ্রু সিক্ত নয়নে রঘু জগন্নাথকে বলল তোমার সেবা পেয়ে আমি ধন্য কিন্তু তুমি তো সহজেই আমার রোগ ভোগ দুর করতে পারতে তবে আমাকে সুস্থ করে দেওয়ার পরিবর্তে কেন তুমি আমার এমন সেবা সুশ্রসা করলে?
জগন্নাথ দেব উত্তরে বললেন কর্ম ফল সবার ভোগা উচিৎ, তোমার সকল প্রারব্ধ কর্ম নাশ করতেই আমি আমার শক্তি প্রয়োগ করে তোমাকে সুস্থ্য করিনি যাতে তুমি দেহান্তে আমার ধামে ফিরে আসতে পারো। তাছাড়া আমার ভক্তগণ যেমন আমার সেবা করে আনন্দ পায়, তেমনি আমিও আমার ভক্তগণের সেবা করে আনন্দ লাভ করি।” এইভাবে প্রভু জগন্নাথ ও রঘুর মধ্যে ভক্তি এবং সখ্যতার মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো।
এই ঘটনা প্রমান করে যে জগন্নাথ প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পন করতে পারলে জগন্নাথ তার সেবা করতে এবং নিজের সখার স্থান দিতে
দ্বিধা করেননা।
ফিরে আসবো প্রভু জগন্নাথের আরো অনেক
লীলা এবং জগন্নাথ মকন্দিরের রহস্য নিয়ে।
পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।