কৃষ্ণ কথা – কালীয়া নাগ দমন
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শ্রী কৃষ্ণের বাল্য লীলা গুলির মধ্যে অত্যন্ত রোমাঞ্চকর একটি অধ্যায় তার কালিয়া নাগ দমন পর্ব। আজকের পর্বে কালিয়া দমন লীলা নিয়ে আলোচনা করবো।
কৃষ্ণের সময়ে কালীয়া নাগ রামাণকনামক এক দ্বীপে বাস করতো । ভগবান শ্রীবিষ্ণুর বাহন শ্রী গরুড় দেবের ভয়ে কালীয়া নাগ একবার রামাণক দ্বীপ ছেড়ে চলে আসেন বৃন্দাবনের যমুনা নদীতে।
কালিয়া নাগের আগমনে বৃন্দাবনবাসীর সাধারণ জীবন যাপন ব্যাহুত হয়। কারন তাদের জীবন ছিলো যমুনা কেন্দ্রিক।কালীয় নাগের বিষের প্রভাবে যমুনার জল বিষাক্ত হয়ে যায় । যখনই গাভী, বাছুরেরা সেই জল পান করে তৎক্ষণাৎ তাদের মৃত্যু ঘটতে থাকে । সকলে কালীয়া নাগের ভয়ে ছিল তটস্থ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই সমস্যার সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
একদিন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সখাদের সাথে যমুনার তীরে খেলছিলেন। খেলার ছলেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যমুনায় ডুব দিলেন। কালীয়া নাগ ভগবানকে তৎক্ষণাৎ সেই স্থান পরিত্যাগ করতে বললেন। কিন্তু ভগবান সেই কথায় কর্ণপাত না করে নদীতে সাঁতার কাটতে লাগলেন।এরপর রাগে কালিয়া নাগ কৃষ্ণকে আক্রমণ করে বসে।
শ্রীকৃষ্ণকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ।
তখন শ্রীকৃষ্ণ এতই বৃহৎ আকার ধারণ করলেন যেন কালীয়া নাগ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। শ্রীকৃষ্ণ তাকে আঘাত করতে লাগলেন এবং তার ফনার উপর নৃত্য করতে লাগলেন।কালিয়া ভগবানের অসীম শক্তি উপলব্ধি করে তার কাছে ক্ষমা চান।এরপর শ্রীকৃষ্ণ একটি শর্তে ক্ষমা করতে রাজী হন।শর্তটি ছিল কালীয়া নাগ কে অবশ্যই যমুনা ও বৃন্দাবন পরিত্যাগ করে দূরে মধ্য সমুদ্রের অবস্থিত রামাণক দ্বীপে ফিরে যেতে হবে।
অনেকই মনে করেন এই দ্বীপ বর্তমানের ফিজি নামক দেশ।আজও ফিজির লোক কথায় কালিয়া নাগের অস্তিত্ব আছে।
কালীয়া নাগ তার দ্বীপে ফিরে যান এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহত্ব উপলব্ধি করে তার নিত্য সেবকে পরিণত হন।একদিক দিয়ে দেখতে গেলে কালীয়া নাগ হলেন পরম সৌভাগ্যবান কারন তার ফনায় ভগবান তার শ্রীচরণ রেখেছিলেন।
আজকের কৃষ্ণ কথা এখানেই শেষ করছি।
ফিরে আসবো কৃষ্ণ কথার পরবর্তী পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।