কৃষ্ণ কথা – শ্রী কৃষ্ণ এবং গোবর্ধন পর্বত

37

কৃষ্ণ কথা – শ্রী কৃষ্ণ এবং গোবর্ধন পর্বত

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শ্রীকৃষ্ণের সাথে জড়িত বিষয় এবং তার বিভিন্ন লীলা এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য নিয়ে এই পবিত্র মধুসূদন মাসে আলোচনা করছি।

 

শ্রী কৃষ্ণের শৈশবের সাথে জড়িয়ে আছে গিরিরাজ গোবর্ধন পর্বতের কথা যে পর্বত আজও প্রতিটি কৃষ্ণ ভক্তের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বৃন্দাবনের দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে এটি একটি।

 

পুরাণের কাহিনিতে মতে ভালো বৃষ্টি হয়ে যাতে ফলন ভালো হয়, তার জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো করতেন বৃন্দাবনবাসী।কারন গবাদী পশু পালন এবং কৃষি কাজের জন্য জলের উপর নির্ভর করতে হতো।

 

কিন্তু ইন্দ্রের আরাধনায় গরীব বৃন্দাবনবাসীর বিপুল খরচ হতো। এই বিপুল ব্যয় পছন্দ করেননি শ্রীকৃষ্ণ। তাই তিনি সেই খাবার ইন্দ্রকে না দিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। শ্রীকৃষ্ণের কথা মেনে বৃন্দাবনের অধিবাসীরা ইন্দ্রের পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন দেবরাজ তিনি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বৃন্দাবনে প্রবল বৃষ্টি নামান।ভারী দুর্যোগ দেখা দেয়।

 

দেবরাজ ইন্দ্রের রোষে বন্যা গোটা বৃন্দাবন প্রায় ভেসে যায়। কৃষ্ণের কারণেই তাঁদের এই বিপদ বলে অভিযোগ করেন বৃন্দাবনবাসী। তারা কৃষ্ণকে সাহায্য করতে বলেন।তখন তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন কিশোর শ্রীকৃষ্ণ। নিজের কনিষ্ঠ আঙুলের ডগায় বৃন্দাবনের গোবর্ধন পর্বত অনায়াসে তুলে ফেলেন শ্রীকৃষ্ণ।

 

প্রবল বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তার নীচে আশ্রয় নেয় বৃন্দাবনের সকল মানুষ ও গবাদি পশু। টানা সাত দিন শ্রী কৃষ্ণ আঙুলের ডগায় গোবর্ধন পাহাড় তুলে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।তার এই দিব্য লীলা দেখে বৃন্দাবনবাসীরা ধন্য হয়।

 

অবশেষে দেবরাজ ইন্দ্র নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেই প্রবল বৃষ্টি বন্ধ করেন।রক্ষা পায় বৃন্দাবন

গৃহে ফিরে গেলে মা যশোদা আট দিনের অভুক্ত কৃষ্ণকে ছাপ্পান রকম পদ রান্না করে খাওয়ায়। সেই থেকে ছাপ্পান ভোগের রীতির প্রচলন হয়।

 

এই ঘটনায় শ্রী কৃষ্ণের পাশাপাশি বৃন্দাবনবাসী গোবর্ধন পর্বতের কাছেও ঋণী হয়ে পরে। তারা গোবর্ধন পর্বতকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করতে শুরু করেন এবং সেই থেকে দীপাবলির পরের দিন গোবর্ধন পুজো শুরু হয়।

 

ফিরে আসবো কৃষ্ণ কথার পরবর্তী

পর্ব নিয়ে যথা সময়ে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।