জয় হনুমান – চিরঞ্জিবী হনুমানজী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আসন্ন হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে শুরু করেছি তিন দিন ব্যাপী বজরংবলী সংক্রান্ত ধারাবাহিক আলোচনা। আজ বজরংবলীর চিরঞ্জিবী সত্ত্বা নিয়ে লিখবো।
শাস্ত্রে যে সাতজন চিরঞ্জিবীর উল্লেখ আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হনুমান।ভগবান হনুমান ভগবান ইন্দ্রের বরপ্রদত্ত। বিশ্বাস করা হয়, হনুমান একমাত্র নিজের ইচ্ছেয় মৃত্যুবরণ করতে পারবেন বলে বর দিয়েছিলেন ইন্দ্র।কিন্তু কেনো এমন বর দেয়ার প্রয়োজন হলো তা নিয়ে শাস্ত্রে একটি
ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়।
হনুমান যখন শিশু ছিলেন, তিনি সূর্যকে দেখেছিলেন এবং ভেবেছিলেন এটি একটি লাল ফল, তাই তিনি এটি খাওয়ার চেষ্টায় এর দিকে উড়ে গেলেন। ইন্দ্র যখন হনুমানকে আসতে দেখেন, তখন তিনি তাকে আঘাত করার জন্য তার বজ্র নিক্ষেপ করেন। আহত হন পবন পুত্র হনুমান সেই ক্রোধে পবন দেব পৃথিবীতে বায়ু সঞ্চালন করতে অস্বীকার করেছিলেন। বায়ুর অভাবে জীবকুল যখন শেষ হয়ে যেতে বসে তখন সমস্ত দেবতারা হনুমানকে বর দেন।বর দিয়েছিলেন যাতে যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা হনুমানের কোনো ক্ষতি না হয়।ভগবান শিব বর দিয়েছিলেন যে তাঁর বা তাঁর কোনো অস্ত্র দ্বারা কখনোই হনুমানের মৃত্যু হবেনা।এই সময়ে দেবরাজ ইন্দ্র বর দিয়েছিলেন যে হনুমানের মৃত্যু কেবল তার নিজের ইচ্ছায় ঘটবে।
ভগবান শ্রী রামও বর দিয়েছেন হনুমানকে। সেই বর অনুযায়ী কলি যুগের শেষ হলে তবেই মুক্তি মিলবে হনুমানের।কলিতে যখন কল্কি অবতার রূপে ভগবান আসবেন তখন আবার দুষ্টের দমন এবং ধর্ম পুনরস্থাপন করতে হনুমানের সাহায্য প্রয়োজন হবে বলেও মনে করা হয়।
আবার সীতাদেবীর বর অনুযায়ী হনুমান চিরঞ্জীবী। তিনি অজর-অমর হওয়ার বর প্রাপ্ত। অর্থাত্ তিনি কখনও বুড়ো হবেন না। আবার তাঁর কখনও মৃত্যু হবে না। কথিত আছে, রামায়ণের সমস্ত চরিত্র মোক্ষ লাভ করে, কিন্তু হনুমান সব সময়ের জন্য পৃথিবীতে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যত দিন মানুষের হৃদয়ে রাম জীবিত আছেন, তত দিন তিনি পৃথিবীতে থাকবেন।
অন্যান্য দেব দেবীদের তুলনায় হনুমান সহজে এবং দ্রুত তার ভক্তের ডাকে সাড়া দেন এবং তাদের মনোস্কামনা পূর্ণ করেন কারন তিনি স্বশরীরে এই পৃথিবীতে বিরাজ করছেন।
ফিরে আসবো পরের পর্বে। বজরংবলী সংক্রান্ত আরো একটি পর্ব নিয়ে। থাকবে হনুমান সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।