জয় হনুমান – বেড়ি হনুমানের কথা

26

জয় হনুমান – বেড়ি হনুমানের কথা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আর কিছুদিন পরেই হনুমান জয়ন্তী। বজরংবলীর আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে এই কটা দিন তার মহিমা বর্ণনা করবো। জানাবো বজরংবলী সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পৌরাণিক তথ্য এবং ঘটনা। আজ শুরু করবো পুরীর বিখ্যাত বেড়ি হনুমানের মন্দির দিয়ে।

 

বাঙালির বড়ো প্ৰিয় এবং অন্যতম জনপ্রিয় তীর্থ ক্ষেত্র হচ্ছে শ্রীক্ষেত্র পুরী|আমি নিজে কতবার যে গেছি তার হিসেব নেই |যারা পুড়িতে গেছেন তারা নিশ্চই জানেন পুরী ধামে চক্রতীর্থের কাছে বেড়ি হনুমান মন্দির অবস্থিত।

 

পুরীর মন্দির তৈরির সময় বেশ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সমুদ্র। ক্রমাগত ঢেউয়ের চোটে, বারবার ব্যাঘাত ঘটছিল মন্দির নির্মাণে। সেই সময় প্রভু জগন্নাথ হনুমানকে মন্দির রক্ষার কাজে নিযুক্ত করেন। মন্দির তৈরী হওয়ার পরেও

কখনও কখনও সমুদ্রের ঢেউ পুরীতে প্রবেশ করত এবং তাতে বহু ভক্ত এবং সাধারণ পুরীবাসীকে ভুগতে হত।ফসলের ক্ষতি হতো।সেজন্য জগন্নাথদেব এখানে পাহারায় হনুমানকে নিযুক্ত করেন, যাতে সমুদ্র পুরী শহরে প্রবেশ করতে না পারে।বজরংবলী হনুমান পুরীতে দ্বার রক্ষক এবং জগতের নাথের ইচ্ছায় তিনি শ্রীক্ষেত্রর সুরক্ষার দায়িত্বে আছেন|

 

পুরীর এই মন্দিরে হনুমানের মূর্তি কেনো একটি বেড়ি দিয়ে আবদ্ধ করা হয়েছে।তার ও একটি কারন আছে|হনুমান তার আরাধ্য শ্রী রাম জন্ম ভূমি দর্শনের জন্য একবার ব্যাকুল হয়ে ওঠেন এবং তার অযোধ্যা পরিদর্শনের জন্য ইচ্ছা হয়। পুরীধাম পাহারার দায়িত্ব ফেলে ঐ স্থান ত্যাগ করে হনুমান অযোধ্যা গেলেন। ফলে সমুদ্রের জল শহরে প্রবেশ করে এবং শহরবাসীর খুব ভোগান্তি হয় ।

অনেকে বলেন সমুদ্র দেব জগন্নাথ দর্শন করতে পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করতেন।

 

আসল কারণ যাই হোক।ভক্ত দের দুঃখ দেখে শ্রীজগন্নাথদেব হনুমানকে অযোধ্যা থেকে ফিরিয়ে আনলেন। তাঁকে এখানে বেড়ি দিয়ে আবদ্ধ করে রাখলেন এবং তাঁকে আজ্ঞা দিলেন যে, কখনও যেন সে এই স্থান ছেড়ে না যায় এবং দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করেন

 

বেড়ি দিয়ে বা শৃঙ্খল দিয়ে আবদ্ধ করার জন্য বজরংবলীকে এখানে বেড়ি হনুমান বলা হয়|যেহেতু হনুমান পুরী ধামকে মহাসাগর বা দরিয়া থেকে সুরক্ষিত রাখতে দরিয়ার নিকটে অবস্থান করছে, সেজন্য তিনি দরিয়া হনুমান নামেও খ্যাত।যারা তীর্থ করতে পুরীতে আসেন তারা জগন্নাথ দর্শনের পাশাপাশি বেড়ি হনুমান দর্শন করতে ভোলেন না। বেড়ি হনুমান ভক্ত ভৎসল এবং তিনি সকল ভক্তের মনোস্কামনা পূরণ করেন।

 

আগামী পর্বে যথা সময়ে আবার ফিরে আসবো

বজরংবলী সংক্রান্ত পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় আলোচনা নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।