শুভ হনুমান জয়ন্তী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ হনুমানজির আবির্ভাব তিথি। এই দিনটিকে ‘হনুমান জয়ন্তী’ হিসেবে পালিত হয় আমাদের দেশে। এই পর্বে আসুন জেনে নিই রূদ্র অবতার হনুমান সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য|
পুরানের একটি ঘটনা অনুসারে একদা দশানন রাবণ কৈলাশে দ্বার পাহারারত নন্দীকে ব্যাঙ্গ করলে, বানর বলে|ক্ষিপ্ত হয়ে নন্দী রাবণকে অভিশাপ দিলেন, নর আর বানরের হাতেই রাবণ আর তার কূল ধ্বংস হবে|এই অভিশাপ সত্য
হয়ে ছিলো যখন হনুমান শ্রী রাম কে লঙ্কা আক্রমণ করতে সাহায্য করেন।
হনুমানের পিতার নাম ছিল কেশরী, মায়ের নাম ছিল অঞ্জনা। হনুমানের পালক পিতা হলেন পবন দেবতা|রাক্ষস বাহিনীর অত্যাচার থেকে ধরিত্রীকে মুক্ত করতে, তথা ভগবান রামের সেবা ও রাম নাম প্রচারের জন্যই রুদ্র অবতার হনুমানের আবির্ভাব।
শাস্ত্র মতে হনুমান চার যুগে অমর, পুরাণে তাই বলা হয়|এমনকি আজও তিনি স্বশরীরে এই পৃথিবীতে বিরাজমান।
রামায়নে রামের সহকারী হিসেবে রাবনকে পরাজিত করতে বিরাট ভূমিকা নিয়েছিলেন বজরংবলী কিন্তু এখানেই শেষ নয় হনুমানজী দ্বাপর যুগেও ছিলেন। মহাভারতেও তার উল্লেখ রয়েছে মনে করা হয় কুরুক্ষে যুদ্ধে অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণের রথের ধ্বজা হিসেবে ছিলেন তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেছেন। হনুমানজীর অনুরোধে শ্রীকৃষ্ণ রামচন্দ্রের রূপ ধারণ করে হনুমানকে একবার দর্শন দিয়েছিলেন।
যেখানে যেখানে রঘুনাথের গুণগান করা হয়, সেখানে সেখানেই তিনি বিরাজমান।
রামকৃষ্ণ মিশনের বহু প্রচলিত একটি রীতি হলো যেখানেই সাধুরা রাম নাম করবেন , কীর্তন ভজন হবে সেখানেই একটি ফাঁকা আসন রাখা হবে, মনে করা হয় ওই ফাঁকা আসনে এসে বসেন স্বয়ং হনুমান তারপর নাম গান শেষ হলে আবার অদৃশ্য হন|
হনুমান চালিসা অনুসারে রোগ ভোগ, ভুত পিশাচ এবং যেকোনো সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় হুনুমানের স্মরণ নিলে, তাকে ভক্তি সহকারে ডাকলে|তিনি অসীম বল শালী কিন্তু সম্পূর্ণ নিরহংকার।রামায়ণে একমাত্র তিনিই নিষ্কাম কর্ম করে গেছেন। প্রভু শ্রী রাম কে সেবা করা ছাড়া তার আর কোনো লক্ষ্য নেই।
জ্যোতিষ শাস্ত্রে বলা হয় হনুমানের স্মরণ নিলে শনি দেবের কুপ্রভাব কেটে যায় কারণ লঙ্কা আক্রমণ করার সময় লঙ্কায় রাবনের হাতে বন্দী শনিদেবকে হনুমান মুক্তি দিয়ে ছিলেন। খুশি হয়ে শনি দেব তার ভক্তদের ক্ষতি না করার প্রতিশ্রুতি দেন।
আজ শাস্ত্র মতে হনুমানজীকে ডাকুন। তার পুজো করুন। তার কৃপায় সংকট দুর হয় মনোস্কামনা
পূর্ণ হয়।সবাইকে হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানাই। ফিরে আসবো আগামী পর্বে পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় আলোচনা নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।