শিব তীর্থ – তারকেশ্বর শিব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাংলার জাগ্রত এবং প্রসিদ্ধ শিব মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম তারকেশ্বর শিব মন্দির যা হুগলীতে অবস্থিত। আজকের শিব তীর্থ পর্বে জানাবো এই ঐতিহাসিক শিব মন্দিরের ইতিহাস এবং মাহাত্ম।
এখানে শিব বাবা তারকনাথ নামে পূজিত।তারক নাথের ধাম তারকেশ্বর নামে খ্যাতি লাভ করে।
শোনা যায়, রাজা ভরমল্ল জঙ্গলে একটি শিবলিঙ্গের স্বপ্ন দেখেন। তারপর তিনিই সেই শিবলিঙ্গ খুঁজে বের করেন। ১৭২৯ সালে সেই শিবলিঙ্গের ওপরেই গড়ে ওঠে বাবা তারকনাথের মন্দির।
আবার একটি প্রচলিত কিংবদন্তী অনুসারে তারকেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা বিষ্ণুদাস নামের এক শিবভক্ত।জনশ্রুতি আছে যে বিষ্ণুদাসের ভাই দেখেন স্থানীয় জঙ্গলে একটি কালো পাথরের ওপর গরুরা নিয়মিত দুধ দান করে আসে। এই অদ্ভুত দৃশ্য দেখে সে তিনি কথা বিষ্ণুদাসকে জানান। আর এর পরই স্বপ্নাদেশে ওই পাথরটিকে শিবজ্ঞানে পুজো শুরু করেন বিষ্ণুদাস।
শিবের তারকেশ্বর রূপ অনুসারে এই মন্দিরের নামকরণ করা হয়।
তারকেশ্বর মন্দিরটি বাংলা আটচালা শৈলীর মন্দির। মন্দিরের সামনে একটি নাটমন্দির অবস্থিত। অদূরেই কালী ও লক্ষ্মী-নারায়ণের দুটি মন্দির রয়েছে। তারকেশ্বর মন্দির সংলগ্নই রয়েছে একটি জলাশয়, যার নাম দুধপুকুর। ভক্তদের বিশ্বাস, দুধপুকুরে স্নান করলে মনের সব আশা পূর্ণ হয়। শোনা যায় শ্রী শ্রী সারদাদেবী নাকি বেশকয়েকবার এই মন্দির পুজো দিতে গিয়েছিলেন।
সারাবছরই তারকেশ্বর মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে তবে শ্রাবণ মাসে শ্রাবনী মেলাতে প্রচুর জনসমাগম হয়। এছাড়া ফাল্গুন মাসে শিবরাত্রিও চৈত্র-সংক্রান্তিতে গাজন উৎসবেও বহু মানুষ আসেন। সমগ্র শ্রাবণ মাস জুড়ে প্রতি সোমবার শিবের বিশেষ পূজা হয়ে থাকে এবং সেই উপলক্ষে বহু মানুষের আগমন ঘটে এই শিব তীর্থে।
আবার ফিরে আসবো শিব তীর্থ নিয়ে যথা সময়ে। থাকবে একটি শিব মন্দিরের ইতিহাস এবং
শিব সংক্রান্ত নানা তথ্য। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।