শিব তীর্থ – ঘন্টেশ্বর শিব

131

শিব তীর্থ – ঘন্টেশ্বর শিব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

হুগলি জেলার এক বিখ্যাত শৈবক্ষেত্র হল খানাকুলের বাবা ঘণ্টেশ্বরের মন্দির। সতীপীঠ রত্নাবলী মন্দিরের কাছেই বাবা ঘণ্টেশ্বরের অবস্থান।আজকের পর্বের আলোচ্য বিষয়

ঘন্টেশ্বর শিব।

 

ঘন্টেশ্বর মন্দিরের শিবলিঙ্গ টি ‘শয়ম্ভু’ বলে উল্লেখ আছে প্রাচীন তন্ত্র শাস্ত্র গুলিতে।এখানে একইসঙ্গে আছে রত্নাবলী কালী মন্দির, যেখানে সতীর বাম স্কন্ধ পড়েছিল বলে কথিত আছে। এছাড়া বিশালাক্ষী, অন্নপূর্ণা, ষষ্ঠী, ধর্ম ঠাকুর,ক্ষুদিরায়, নিতাই গৌড় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা আছে। জায়গাটির মহিমার জন্য একে গুপ্তকাশী বলেও উল্লেখ করা হয়।

 

শোনা যায়, বহুকাল আগে খানাকুলেরই পার্শ্ববর্তী এক গ্রামের বাসিন্দা বটুক কারকের একটি গরু রোজ একটি শিমূল গাছের পাশে দুধ দিত। কিন্তু কোনও দিনই বাড়িতে দুধ দিত না গরুটি। প্রতিদিন একই ঘটনা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে বটুকবাবুর। কৌতুহলের বশেই তিনি একদিন সেই নির্দিষ্ট জায়গাটি খনন করেন। কিছুটা খনন করতেই দেখা মেলে শিব লিঙ্গ। সেই শিব লিঙ্গই ঘন্টেশ্বর শিব নামে পূজিত হচ্ছে।একসময় নাকি তালপাতা ও মাটির ঘরেই থাকতেন বাবা ঘণ্টেশ্বর ও মা রত্নাবলী। পরবর্তীকালে গ্রামবাসীদের দান করা জমিতে গড়ে ওঠে মন্দির।

 

বটুক কারকের পরিবারই বংশ পরম্পরায় মন্দিরের রক্ষনা বেক্ষন এবং পুজোর দায়িত্বে আছে এবং একাধিক বার মন্দিরের সংস্কার হয়।

 

একসময় আরামবাগ মহকুমা জুড়ে ডোম, বর্গ ক্ষত্রিয় ইত্যাদি সম্প্রদায়ের মানুষ আদি বাসিন্দা হিসেবে বসবাস করতেন। তাদের আরাধ্য দেবতা ছিলেন ধর্ম ঠাকুর। পরবর্তীতে তারাই হয়ে ওঠেন ঘন্টেশ্বর মহাদেবের ভক্ত এবং তাদের পুজো পদ্ধতি মিশে যায় শিবের গাজনের সাথে।

 

শিব চতুর্দশী এবং শিব রাত্রিতে এখানে বড়ো করে পুজো হয় এবং বহু ভক্তের সমাগম হয়।

 

আবার যথা সময়ে ফিরে আসবো শিব তীর্থ নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।