শিব মাহাত্ম – পশুপতি শিব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শিব যে শুধু দেবতাদের আরাধ্য দেবতা তা নয়। তিনি সমগ্র পশু সমাজের আরাধ্য। তাই শিবকে পশুপতি রূপেও পুজো করা হয়। নেপালে শিব পশু পতি রূপেই বিরাজমান। আজ শিবের এই বিশেষ রূপটি নিয়ে লিখবো।
কাঠমান্ডু শহরের খুব কাছে দিওপাটন শহরের বুকে,বাগমতি নদীর তীরে পশুপতিনাথ মন্দির অবস্থিত। হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে এই মন্দিরটির গুরত্ব অপরিসীম|শিবের আরেক নাম হল পশুপতিনাথ। সেই নামেই এই মন্দিরটির নাম পশুনাথ মন্দির।নেপাল ভ্রমণকালে আমার এই মন্দির দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
পশুপতি নাথ মন্দিরটি কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না তবে ঐতিহাসিকদের মতে চতুর্থ শতাব্দী থেকেই নেপালের এই জায়গায় মন্দিরটির অস্তিত্ব ছিল।মন্দিরকে কেন্দ্র করে একটি পৌরাণিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়।একবার শিব ও পার্বতী কাটমান্ডুর বাগমতী নতীর তীরে ভ্রমণ করতে এসেছিলেন। নদী তীরবর্তী উপত্যকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুদ্ধ হয়ে হরিণের বেশ ধরে ওই এলাকায় ঘুড়ে বেড়াতে থাকেন দুজনে। কিন্তু দেবতারা পড়ে যান বিপদে ।শিব ছাড়া সৃষ্টি অচল প্রায়!অনেক কষ্টে শিবকে খুঁজে পেলেও দেবাদিদেব শিব এই স্থান থেকে যেতে নারাজ।বহু অনুরোধে পরে শিব ঠিক করেন তিনি কৈলাশে ফিরে গেলেও পশুদের পালন কর্তা হিসাবে এখানে তিনি পরিচিত হবেন। তারপর থেকেই এখানে শিবকে পশুপতিনাথ হিসেবে পূজা করা হয়।
পুরানে অবশ্য এই পশুপতি রূপে অন্য একটি ব্যাখ্যাও আছে যেখানে পশু অর্থাৎ সত্ত্বা এবং পতি অর্থাৎ অভিভাবক। একবার সব দেবতারা ব্রম্হার আহ্বানে সৃষ্টি যজ্ঞ করেন কিন্তু শিবকে আমন্ত্রণ জানাতে তারা ভুলে যান। শিব রুদ্র মূর্তি ধরে যজ্ঞ স্থলে আসলে দেবতারা ভীত হয়ে তার কাছে ক্ষমা চান এবং মহাদেবকে তাদের সমগ্র সত্ত্বার অধিকারী বা পশুপতি আখ্যা দেন।
শিব মাহাত্ম নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। থাকবে শিব সংক্রান্ত শাস্ত্রীয় আলোচনা এবং একটি শিব মন্দিরের কথা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।