শিব তীর্থ – রাজরাজেশ্বর শিব

158

শিব তীর্থ – রাজরাজেশ্বর শিব

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

প্রায় আড়াইশো বছরের পুরোনো গৌরবময় রাজ রাজেশ্বর মন্দির রয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণ নগরের কাছে শিব নিবাসে যে মন্দিরের সাথে জড়িত আছে অনেক ইতিহাস অনেক কিংবদন্তী।

শোনা যায় যে কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র নসরত খাঁ নামে এক ডাকাতকে দমন করতে কৃষ্ণগঞ্জের কাছে গভীর বনের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন রাতে আহার করার পর পাশে বয়ে যাওয়া চূর্নী নদীতে মুখ ধুচ্ছিলেন রাজা মশাই সেই সময় একটি রুই মাছ তার কাছে চলে আসে। তাই দেখে এক রাজ কর্মচারী বলেন যদি এখানে বসবাস করেন তবে রাজার ভালোই হবে।কথাটা রাজা কৃষ্ণ চন্দ্রের মনে ধরে।পরবর্তীতে নিজের রাজ্য মারাঠাদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য  সাময়িকভাবে কৃষ্ণনগর থেকে শিবনিবাসে তার রাজধানী স্থানান্তরিত করেন মহারাজা কৃষ্ণ চন্দ্র।

জনশ্রুতি আছে মহাদেবের সপ্নাদেশ পেয়ে তাকে সন্তুষ্ট করতে মহারাজা শিবনিবাসে মন্দির স্থাপন করেছিলেন। মন্দিরের নাম রাখা হয় রাজ রাজেশ্বর মন্দির।এই মন্দিরে স্থাপিত শিবলিঙ্গ এশিয়ার বৃহত্তম বলে মনে করা হয়। রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ার পরে মহারাজা সম্ভবত এই জায়গাটির নাম শিবনিবাস নামকরণ করেন।  আবার অনেকে বলেন এই নামটি তাঁর পুত্র শিবচন্দ্রের নামে রাখা হয়েছিল।

মন্দিরের চূড়া সমেত উচ্চতা একশো কুড়ি ফুট।মন্দিরের ভিতর কালো শিবলিঙ্গ যার উচ্চতা প্রায় বারো ফুট এবং বেড় ছত্রিশ ফুট। সিঁড়ি দিয়ে উঠে শিবের মাথায় জল ঢালতে হয়।
শিবভক্তরা শ্রাবণ মাসে প্রতি সোমবার নবদ্বীপের গঙ্গা থেকে জল নিয়ে হেঁটে শিবনিবাসে এসে শিবের মাথায় জল ঢালেন। শিব রাত্রিতেও বিশেষ পুজো হয়। নদীয়া তথা বাংলার ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন শিব মন্দিরগুলির মধ্যে এটি
অন্যতম জনপ্রিয় শিব তীর্থ

ফিরে আসবো শিবতীর্থ নিয়ে আগামী পর্বে।
শিবরাত্রি উপলক্ষে চলতে থাকবে এই
ধারাবাহিক আলোচনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।