কালী তীর্থ – রসুনিয়ার ডাকাত কালীর পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বর্ধমানের মঙ্গল কোটে রয়েছে প্রাচীন এক ডাকাত কালী মন্দির। প্রায় তিনশো বছর ধরে এখানে
ডাকাত সর্দার শক্তি ডোম প্রতিষ্ঠিত কালী
মূর্তির পূজ হয়ে আসছে। আজকের কালী তীর্থে এই ডাকাত কালী মন্দিরের ইতিহাস
আপনাদের জানাবো।
মঙ্গলকোটের রসুনিয়া গ্রামে বসবাস করতেন
শক্তি ডোম। দিনের বেলা তিনি নানা রকম খেলা দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিতেন আবার রাতের অন্ধকারে তিনিই চালাতেন বেপরোয়া ডাকাতি। তাঁর লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে উঠেছিল মঙ্গলকোটের ত্রাস।ডাকাতির পাশাপাশি চলতো শক্তি ডাকাতের মাতৃ সাধনা।
বন জঙ্গলে ঘেরা রসুনিয়া গ্রামে পঞ্চমুণ্ডির আসন তৈরি করে মাকালীর উপাসনা করতেন ডাকাত সর্দার।সেই রসুনিয়ার কালী মন্দিরে আজও আছে পঞ্চমুণ্ডির আসন।তবে আজ আর সেই ডাকাত নেই।গ্রামের মানুষ আজও চালিয়ে যাচ্ছেন
শক্তি ডোমের আরাধ্য কালীর পুজো।
এখন এই কালীপুজোই রসুনিয়া গ্রামের মূল উৎসব। পুজো ঘিরে আনন্দে ভরে ওঠে গোটা গ্রাম।
জনশ্রুতি আছে একবার কালীপুজোর রাতে গ্রামের উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার পরই দেবীর ঘট আনা হয়।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, মন্দিরের পূর্বদিকে জানালা থাকা আবশ্যিক। কারণ আগে মাটির মন্দির তৈরির সময়, তার পূর্বদিকে জানালা না করায় সেই মন্দিরটি ধসে পড়ে যায়। পরবর্তীকালে পূর্বদিকে জানালা রেখে বড় পাকা মন্দির নির্মাণ করা হয়।
এই পুজোয় নিশিভোরে হয় কালীর পুজো। এখানে দেবীর আরতির প্রচলন নেই। তবে শক্তি ডোমের প্রথা মেনে আজও ছাগবলির রীতি রয়েছে।শোনা যায়, আগে প্রতি অমাবস্যার রাতে মন্দিরের কাছ থেকে ঘুঙুরের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যেত। ওই সময় মা কালী বেরিয়ে আসতেন বলেই স্থানীয়দের বিশ্বাস। এখন প্রতি অমাবস্যায় মায়ের ভোগ দেওয়া হয়।
আবার যথা সময়ে ফিরে আসবো
একটি কালী তীর্থ নিয়ে থাকবে অন্য একটি
প্রাচীন কালী মন্দিরের ইতিহাস।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।