ভক্তের ভগবান – শিব ভক্ত কুবেরদেব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
সনাতন ধর্মে দেবী ধন সম্পদের দেবী হলেও কুবের দেব হলেন ধন সম্পদের দাতা এবং রক্ষা কর্তা। তার আশীর্বাদ ছাড়া সম্পদ আসেনা বা এলেও স্থায়ী হয়না।এই কুবের দেব হলেন মহান শিব
ভক্ত শিবের দয়াতেই তিনি ধনরাজ হন। আজ এই শিব ভক্ত এবং ভক্ত এবং ভগবানের মধ্যে ঘটে যাওয়া একটি বিশেষ লীলা নিয়ে
আলোচনা করবো।
কুবের ছিলেন যক্ষের রাজা এবং সম্পর্কে রাবনের ভাই।একবার লঙ্কার রাজা রাবণ ভাই কুবেরকে লঙ্কা থেকে বিতাড়িত করেন এবং পুষ্পক রথ সমেত তার সমস্ত ধন সম্পদ অধিকার করে নেন।তখন কুবেরকে সেখান থেকে মূল ভূখণ্ডে চলে যেতে হয়। নিজের রাজ্য এবং সম্পদ হারানোর হতাশায় কুবের হিমালয়ে গিয়ে ভগবান শিবের তপস্যা শুরু করেন এবং পরম শিব
ভক্ত হয়ে ওঠেন।
তার তপস্যায় তুষ্ট হয়ে শিব দয়া করে কুবেরকে তার রাজ্য এবং সমগ্র বিশ্বের ধনসম্পদের অধিকারী করে দেন এইভাবেই কুবের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
ধনরাজ হয়ে কুবেরের মধ্যে অহংকার জন্ম নেয় তিনি ভাবতে শুরু করেন তিনিই শিবের সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত, কারণ তিনি শিবকে অনেক কিছু দিয়েছিলেন।শিবকে নৈবেদ্য রূপে বিপুল ধন সম্পত্তি দিতে চাইলে ভগবান শিব শুধুমাত্র বিভূতি ছাড়া আর কিছুই স্পর্শ করেননি।
ভক্ত রূপে কুবের যখন নিজেকে শ্রেষ্ঠ এবং অসীম ক্ষমতার অধিকারী ভাবতে শুরু করেন তখন শিব তাকে শিক্ষা দিতে কুবেরের প্রাসাদে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গণেশকে পাঠান।সব খাদ্য দ্রব্য শেষ করে গণেশ কুবেরের সমস্ত সঞ্চিত ধনসম্পদ গ্রাস করতে শুরু করেন।যখন প্রায় নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে তখন কুবের মহাদেবের লীলা বুঝতে পারেন এবং নিজের অহংকারের জন্য মহাদেবের কাছে ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পান।
ভগবান যেমন ভক্তের তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে তার সব মনোস্কামনা পূর্ণ করতে পারেন আবার ভুল করলে তাকে শাস্তি দিয়ে সঠিক পথে ফিরিয়েও আনতে পারেন।
ফিরে আসবো ভক্ত এবং ভগবানের আরো এক পৌরাণিক লীলা নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।