ভক্তের ভগবান – কৃষ্ণ ভক্ত অর্জুন
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
সনাতন ধর্মে দেবতা অনেক আছে কিন্তু ভগবান একজনই।তিনি শ্রী কৃষ্ণ।তার মধ্যে সর্বগুন সর্বোচ্চ মাত্রায় বর্তমান তাই তিনি ভগবান। তিনিই অন্তিম আকর্ষণ তার দর্শন পাওয়ার পর আর কিছু আকর্ষণ থাকেনা।
তিনি একাধারে বীর যোদ্ধা আবার পরম দয়ালু তিনি দ্বারকাধীশ আবার অর্জুনের রথের সারথি|তার রূপ ও অনেক|তার একেকজন ভক্তকে তিনি এক এক রূপে দর্শন দিয়েছেন আজ আলোচনা করবো তার বিশ্বরূপ বা বিরাট রূপ নিয়ে। যে রূপে তিনি তার পরম ভক্ত অর্জুনকে দর্শন দিয়ে তার মনোস্কামনা পূর্ণ করেছিলেন।
কুরুক্ষে যুদ্ধে কৃষ্ণ বার বার অর্জুনকে নিজের বিশ্বরূপ দেখার আজ্ঞা দেন, কিন্তু অর্জুন কিছু দেখতে পারেন না|তখন কৃষ্ণ বলেন-কিন্তু তুমি নিজের এই চোখ দিয়ে আমার দিব্য রূপ দেখতে পারবে না। তাই আমি তোমায় দিব্য চক্ষু দিচ্ছি। যার সাহায্যে তুমি আমার ঐশ্বরিক ক্ষমতা দেখতে পারবে|এরপর অর্জুনকে দিব্য দৃষ্টি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে নিজের পরম ঐশ্বরিক বিরাট রূপ দেখান।গোটা বিশ্ব ব্রম্ভান্ড যেনো এই রূপের কাছে তুচ্ছ|মনে করা হয় যদি আকাশে একসঙ্গে হাজার সূর্যোদয় হয়, তখনও তাদের সকলের প্রকাশ মিলে সেই বিরাট রূপের প্রকাশের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।শ্রী কৃষ্ণের এই রূপে অনেক মুখ ও চোখ আছে, অনেক অলৌকিক অলঙ্কার আছে, হাতে নানান দিব্য অস্ত্র-শস্ত্র আছে এবং তার গলায় নানান ধরণের দিব্য মালা আছে| তিনি একপ্রকার অলৌকিক বস্ত্র পরে আছেন এবং ললাট ও শরীরে দিব্য চন্দন, কুমকুম ইত্যাদি লাগানো রয়েছে|
শাস্ত্রে উল্লেখ আছে এমন বিরাট রূপ দেখে অর্জুন আশ্চর্যচকিত হয়ে পড়েন এবং তাঁর শিহরণ দেখা দেয়। তিনি করজোড়ে এবং মাথা নুইয়ে প্রণাম করে বিরাট রূপ শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি করতে শুরু করেন|
শ্রী কৃষ্ণ শুধু তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভক্ত অর্জুনকে বিরাট রূপ দেখিয়ে বিরত থাকেন নি। তিনি যুদ্ধে স্বজন হত্যার চিন্তায় বিমর্শ অর্জুনকে দিব্য জ্ঞান দিয়ে ছিলেন এবং বুঝিয়ে ছিলেন মানুষ নিমিত্ত মাত্র স্বয়ং ভগবানই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং যা হবে তার ইচ্ছেতেই হবে। তাই মানুষের উচিৎ নিষ্কাম কর্ম করে যাওয়া।শুধু বাণী নয় যুদ্ধক্ষত্রে তিনি তার অনুগত ভক্ত কৃষ্ণের রথের সারথি হতেও দ্বিধা বোধ করেননি।
ভগবান আক্ষরিক অর্থেই ভক্তের ভগবান।
ভক্তকে সঠিক দিশা দেখিয়ে জীবনের সব যুদ্ধে জয়ী করার জন্য তিনি সদা সচেষ্ট।
আবার ভক্তের ভগবান এবং তার লীলা নিয়ে
ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে। পরতে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।