ভক্তের ভগবান – মাতা সীতা এবং ভক্ত বজরংবলী

11

ভক্তের ভগবান – মাতা সীতা এবং ভক্ত বজরংবলী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

সবাই পবন পুত্র হনুমানকে রাম ভক্ত বলেই জানেন। কিন্তু শুধু রাম নন রূদ্র অবতার হনুমান ছিলেন মাতা সীতার ও ভক্ত। কবিরাজ তুলসী দাস তার হনুমান চালিশায় লিখেছেন যে হনুমানকে অষ্ট সিদ্ধি এবং নব নিধীর অধিকারী করেছেন মাতা সীতা।

 

রূদ্র অবতার নিজের জীবন তুচ্ছ করে লঙ্কায় গিয়ে শ্রী রামের দূত হিসেবে সীতা মাতার সঙ্গে দেখা করেন এবং সেই সময়ে তিনি মাতা সীতাকে উদ্ধার করতেও চান কিন্তু সীতা রাজি হননি কারন ভগবানের ইচ্ছে ছিলো অন্যরকম। স্বয়ং শ্রী রাম এসে রাবনকে তার পাপের শাস্তি দেবেন এবং সীতাকে উদ্ধার করবেন এই ছিলো ভবিতব্য।

 

আজ এই মহান বৈষ্ণব এবং মাতা সীতার একটি পৌরাণিক ঘটনা আপনাদের জানাবো যেখানে তার রাম ভক্তি খুব সুন্দর ভাবে

ফুটে উঠেছে।

 

পুরানে উল্লেখ আছে একদিন দেবী সীতাকে সিঁদুর পড়তে দেখে হনুমান সীতাকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি কেন সিঁদুর পড়ছেন, উত্তরে সীতা হনুমানকে জানিয়েছিলেন যে তার প্রভু শ্রী রামের দীর্ঘায়ুর জন্যই সিথিতে সিঁদুর পড়েন তিনি।হনুমান তখন ভাবেন যদি সিঁদুরই তাঁর প্রভু রামের দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি হয় তাহলে তিনিও সিঁদুর পড়বেন।তাই সীতার কথা শুনেই নিজের পুরো শরীরেই সিঁদুর মেখে নেন হনুমান।এখান থেকেই সূত্রপাত হয় তার সিঁদুর প্রীতির |গুরুর প্রতি শিষ্যের এমন ভালোবাসা ও ভক্তির কথা জানতে পেরে শ্রীরামচন্দ্র হনুমানকে আশীর্বাদ করেন যে, সবাই তাকে সিঁদুর দিয়ে পুজো করবে। আর সেই থেকে আজও ভগবান হনুমানকে সিঁদুর দান করে পুজো করা হয়।এরপর থেকেই হনুমান ভক্তরা মনে করেন বীর হনুমানকে সিঁদুর দান করলে তিনি সেই সিঁদুর নিজের গায়ে মাখেন এবং ভক্তের সমস্ত ইচ্ছে পূরণ করে দেন।

 

আবার লঙ্কা বিজয় করে অযোধ্যায় ফেরার পর মাতা সীতা যখন তার প্রিয় হনুমকে একটি বহু মূল্য রত্নের মালা দেন তখন হনুমান খেলার ছলে তা ছিঁড়ে ফেলেন এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সীতা তাকে তিরস্কার করেন এতে হনুমান জানান তিনি তাদের চরণে স্থান চান আর কিছু নয়। মাতা সীতা এবং প্রভু রাম তার হৃদয়ে বিরাজ করছেন। এই বলে হনুমান নিজের বুক চিরে রাম সীতার দর্শন করান।

 

ফিরে আসবো ভক্ত এবং ভগবানের আরো একটি দিব্য লীলা নিয়ে পরবর্তী পর্বে। পরতে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।