কালী কথা – খলিসানী কালীর পুজো 

24

কালী কথা – খলিসানী কালীর পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

তন্ত্র অনুসারে কালী দশমহাবিদ্যা-র প্রথম দেবী। শাক্তমতে কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। বাঙালি হিন্দু সমাজে কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয়।বাংলায় তিনি দেবী দুর্গার ন্যায় ঘরের মেয়ে। দুর্গাপুজোর পর আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি দেবী কালীর পুজোর জন্য। বাংলায় কালী মন্দিরের সংখ্যাও অগণিত। এমনই এক কালী মন্দির হাওড়ার খলিসানি কালী মন্দির যা নিয়ে আজকের কালী কথা।

 

বর্তমানে হাওড়ার ষোলো নম্বর জাতীয় সড়কের খলিশানী কালীতলা স্টপেজ থেকে পশ্চিমদিকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই এই মন্দির যা স্থানীয়দের মতে চারশো বছরেরও বেশি প্রাচীন।

 

এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কালী প্রসন্ন ভট্টাচার্য। প্রথমে তিনি দেবীর ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন।পরে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে গৌরী নদীর তীরে শ্মশানের মাঝে কালীমূর্তি স্থাপন ও প্রতিষ্ঠা করেন কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য।

সেই সময়ে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুবই কম ছিল। ফলে এলাকাটি ছিল ডাকাতদের এবং বন্যা জন্তুদের আখড়া। পরবর্তীতে এই কালী মন্দিরের প্রসিদ্ধি ছড়িয়ে পরে সব জায়গায়।

 

স্থানীয়দের কাছে দেবী বুড়িমা নামেই বেশি জনপ্রিয়।সারা বছর বহু দূর থেকে অজস্র মানুষ ছুটে আসেন খলিশানীর এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে।সবার বিশ্বাস মায়ের কাছে নিষ্ঠা ভরে মানত করলে সব মনস্কামনা পূর্ণ হয়।সেরে যায় কঠিন ব্যাধি।

 

বর্তমানে প্রায় শতাধিক কালীপুজো হয়। কিন্তু সকলেই আগে বুড়িমার কাছে পুজো নিবেদন করেন, তারপর কালীপুজো হয়।এমনকি বুড়িমার কাছে পুজো না দিয়ে এলাকায় একটিও শুভ কাজ সম্পন্ন হয়না।

 

এই কালী মন্দিরে দীপান্বিতা অমাবস্যায় কার্যত তিল ধারণের জায়গা থাকে না। দীপান্বিতা অমাবস্যাই এই মন্দিরের প্রধান উৎসব বলা যায়।

 

ফিরে আসবো পরের পর্বে কালী কথার আরো একটি অধ্যায় নিয়ে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।