কালী কথা – কল্যাণময়ী কালীর ইতিহাস

33

কালী কথা – কল্যাণময়ী কালীর ইতিহাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ দীপাবলীর এই পবিত্র দিনে আপনাদের উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুর কল্যাণময়ী কালীর কথা জানাবো যে কালীকে অনেকে কাঞ্চন তলার কালী বলেও চেনেন।

 

যে সময়ের কথা বলছি বাদু তখন গ্রামাঞ্চল।

বাদুর কাছেই কাঞ্চনতলায় বসবাস করতেন মাতৃসাধক দিলীপ চট্টোপাধ্যায়।একটি বড় নিম গাছের নীচে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঈশ্বরচিন্তা করতেন তিনি। তাকিয়ে থাকতেন সামনের এক শান্ত এবং বিরাট জলাশয়ের দিকে।একদিন

মা কালী স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন ভক্ত দিলীপকে।

 

স্বপ্নে দেখা দিয়ে দেবী বললেন, “নিমগাছের পাশের পুষ্করিণীতে আমার কষ্টি পাথরের মূর্তি আছে। ওই মূর্তি উদ্ধার করে তুই প্রতিষ্ঠা কর। নিত্যপুজো করবি। বৈষ্ণব মতে পুজো হবে। বলিদান বা আমিষ ভোগ নয়। এটি আমার কল্যাণময়ী রূপ।”

 

পরদিন ঠিক কথা মতো পুকুর থেকে পাওয়া গেল ছোট্ট একটি কষ্টি পাথরের মাতৃমূর্তি।

দিলীপ চট্টোপাধ্যায় পরম যত্নে মায়ের মূর্তি এনে বসালেন নিম গাছের নীচে। এখানেই তৈরি হল কল্যাণময়ী মায়ের মন্দির। মন্দির চত্বরে আছেন দেবদিদেব মহাদেবও। সেই শিবলিঙ্গও খুব জাগ্রত। তিনিও ভক্তকে সবরকম বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আছেন শালগ্রাম শিলাও।বর্তমানে সেই নিম গাছটিকে ভক্তরা কল্যাণময়ী মায়ের কল্পতরু বৃক্ষ মনে করেন।  মায়ের কাছে মনোস্কামনা জানিয়ে গাছে ডোর বাঁধেন এবং দেবী প্রতি তাদের অগাধ আস্থা।

 

এখানে কালীপুজোর রাতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কল্যাণময়ী মায়ের আরাধনা করেন প্রয়াত মাতৃসাধক দিলীপ চট্টোপাধ্যায়ের বংশধরেরা।

মায়ের স্বপ্নে দেয়া আদেশ অনুসারে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। আমিষ ভোগ থাকেনা। তার বদলে

ঘিয়ের পরমান্ন আর খিচুড়ি। তার সঙ্গে থকে পাঁচ রকম ভাজা, তরকারি, চাটনি। এছাড়া মায়ের পছন্দের খাদ্যতালিকায় আছে চিঁড়ে, গুড় , নারকেল এই সব প্রসাদ যা পরম আনন্দে গ্রহন করেন দুর দুর থেকে আসা ভক্তবৃন্দ।

 

আবার কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে ফিরে আসবো। থাকবে অন্য এক কালী মন্দিরের ইতিহাস। সবাইকে জানাই শুভ দীপাবলী

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।