বিশেষ পর্ব – ভূত চতুর্দশী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাংলায় কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। ভূত চতুর্দশী নামটার মধ্যেই যেন লুকিয়ে থাকে একটা অলৌকিক এবং ভৌতিক বিষয়। কিন্তু শাস্ত্র মতে ভূত চতুর্দশীর আলাদা ব্যাখ্যা আছে। আজকের এই পর্বে সেই ব্যাখ্যাই আপনাদের শোনাবো।
রাজা বলীকে পরাস্ত করে পাতালে পাঠানোর পর ভগবান বিষ্ণু রাজা বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। পুরান মতে নরকাসুররূপী রাজা বলি কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে তার অসংখ্য অনুচর ভূত, প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে।
আবার অন্য একটি শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা হলো এই তিথিতে দেবী কালী চামুণ্ডা রূপে ভূত এবং প্রেতাত্মা সঙ্গে নিয়ে মর্তে আসেন অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটাতে।
ভূত চতুর্দশীতে সন্ধ্যাবেলা চোদ্দ প্রদীপ দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত রয়েছে, এ ছাড়া এই দিন চোদ্দ শাক খাওয়ার নিয়মও রয়েছে। কথিত রয়েছে, এই চোদ্দ প্রদীপ আমাদের পূর্বপুরুষ অর্থাৎ আমাদের চোদ্দ পুরুষদের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়।এই শাকের ও একটি তালিকা আছে যার নাম বিভিন্ন অঞ্চলে বদলে যায়।
মনে করা হয় পূর্বপুরুষের আত্মা এই তিথিতে মর্ত্যলোকে আসেন।তাদের উদ্দেশ্যে এই প্রদীপ এবং তাদের কথা স্মরণ করে এই রীতি
পালন করা হয়।
আবার কিছু ব্যাখ্যায় অমাবস্যার আগে অশুভ শক্তির আগমনের উল্লেখ পাওয়া যায় এবং বলা হয় এই অশুভ শক্তির থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যেই জ্বালানো হয় চোদ্দ প্রদীপ।
অর্থাৎ এই ভূত চতুর্দশীর ভূত অর্থাৎ আত্মাও হয় আবার আমাদের পূর্বপুরুষ দের স্মৃতিও হয়।
সবাইকে জানাই দীপাবলীর আগাম শুভেচ্ছা। ফিরে আসবো কালীকথার পরবর্তী পর্ব
নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।