ধনতেরাসের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

14

ধনতেরাসের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ধনতেরাস উপলক্ষে আজকের এই বিশেষ পর্বে আলোচনা করবো ধনতেরাস নিয়ে, জানবো এই উৎসবের সাথে জড়িত এক অদ্ভুত পৌরাণিক ঘটনা এবং এই উৎসবের গুরুত্ ও তার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা।

 

ধনতেরাস অনেকের কাছেই কুবের পুজোর দিন এই দিন কুবের আরাধনা করলে তিনি অর্থ এবং সম্পদ দেন বলে বিশ্বাস।তাই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা এ দিন দামি ধাতু কেনেন। সম্পদের দেবতা

 

পুরান অনুসারে একসময় দুর্বাশা মুনির অভিশাপে স্বর্গ হয় লক্ষ্মীহীন। অসুর দের সঙ্গে লড়াই করে সমুদ্রমন্থনের পর ধনতেরাসের এই দিনেই

দেবতারা ফিরে পান দেবী লক্ষ্মীকে। শ্রীহীন অবস্থাথেকে লক্ষীপ্রাপ্তির পুন্য তিথিই ধনতেরাস রূপে পালিত হয় যা ক্রমে একটি উৎসবের রূপ নেয়।

 

আবার ধনতেরাস নিয়ে একটি পৌরাণিক কাহিনীও আছে।প্রাচীন কালে ভারতবর্ষে এক রাজা ছিলেন, তার নাম ছিলো রাজা হিমা, রাজা হিমার ১৬ বছরের ছেলের কোষ্টিতে লেখা ছিল বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে। তার স্ত্রীও জানত সেই কথা। তাই সেই অভিশপ্ত দিনে সে তার স্বামীকে সে দিন ঘুমোতে দেয়নি। শোয়ার ঘরের বাইরে সে সমস্ত গয়না ও সোনা-রূপার মুদ্রা জড়ো করে রাখে। সেই সঙ্গে সারা ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দেয়। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সে সারারাত তাকে গল্প শোনায়, গান শোনায়। পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম তাদের ঘরের দরজায় আসে, আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে যায়। সকালে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যান তিনি। রাজপুত্রের প্রাণ বেঁচে যায়। পরদিন সেই আনন্দে ধনতেরাস পালন শুরু হয়।এই জন্যে ধনতেরাসে সোনা কেনা শুভ বলে মনে করা হয়।

 

দীপাবলী মূলত পাঁচ দিনের উৎসব যার মধ্যে ধনতেরাস অন্যতম।এর আর এক নাম আছে।ধনাত্রয়োদশী বা ধনবত্রী ত্রয়োদশী। ‘ধন’ শব্দের মানে সম্পত্তি। ত্রয়োদশী হলো তিথি।দীপাবলীর সময় লক্ষ্মীপুজোর দিন দুই আগে ধনতেরাস হয়।বলা হয়, ধনতেরাসের দিন দেবী লক্ষ্মী তার ভক্তদের গৃহে যান ও তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করেন।

 

আপনাদের সবাইকে জানাই ধনতেরাসের অনেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। শাস্ত্র মতে ধনতেরাস পালন করুন।মা লক্ষী এবং কুবেরের কৃপায় আপনাদের মঙ্গল হবে। ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।