মহালয়ার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
প্রথম পর্ব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
মহালয়া অর্থাৎ পিতৃ পক্ষের অবসান এবং দেবী পক্ষের সূচনা লগ্ন।আজকের এই বিশেষ পর্বে আপনাদের জানাবো শাস্ত্রীয় দৃষ্টি ভঙ্গী থেকে কি এই মহালয়া এবং কেনো পালন করা হয় কিবা এই মহালয়ার আধ্যাত্মিক গুরুত্ব।
সহজ ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় মহালয়া হলো সেই বিশেষ অমাবস্যা তিথি যে তিথিতে আমাদের পূর্ব পুরুষের আত্মার আমাদের কাছাকাছি আসেন এবং আমরা খুব সহযে তর্পনের মাধ্যমে তাদের আত্মাকে চির শান্তি প্রদান করতে পারি।এই তর্পনের শাস্ত্র সম্মত তিথি হলো মহালয়া তিথি|
মহাভারতে উল্লেখ আছে যে কর্ণের মৃত্যুর পরে তার আত্মা স্বর্গে গমন করলে, তাকে স্বর্ণ ও রত্ন খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়। কর্ণ ইন্দ্রকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বলেন, কর্ণ সারা জীবন স্বর্ণ এবং রত্ন দান করেছেন, তিনি পিতৃপুরুষের আত্মার উদ্দেশ্যে কোনোদিনো কোনো খাদ্য দান করেননি।তাদের কাছে প্রার্থনা করেননি তাই স্বর্গে তাকে স্বর্ণই খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। পিতৃ পুরুষের আশীর্বাদ থেকেও তিনি বঞ্চিত। তার পুন্য সঞ্চয় অসম্পূর্ণ।
তার উত্তরে কর্ণ বলেন, তিনি যেহেতু তার পিতৃপুরুষ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। তাই তিনি অসহায় এবং অজ্ঞানতা বসত এই অন্যায় করে ফেলেছেন।তারপর কারণে কর্ণকে ষোলো দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সময়
কালকে পিতৃপক্ষ বলা হয়।
রামায়ণ অনুসারে শ্রী রাম ও তার পিতা দশরথের মৃত্যুর পর তার আত্মার শান্তির জন্য ফল্গু নদীর ধারে একটি ডুমুর গাছের নিচে তর্পন অনুষ্ঠান করেছিলেন এবং আত্মার শান্তি কামনা করে ছিলেন।
একটি শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুসারে জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। পিতৃ পক্ষে এই আত্মারা উত্তর পুরুষের তর্পনের মাধ্যমে চীরমুক্তি লাভ করে এবং পরম ব্রহ্মর সাথে বিলীন হয়।
মহালয়া নিয়ে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রে এই মহা লয়া অমাবস্যার গুরুত্ব নিয়ে পরের পর্বে আবার ফিরে আসবো। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।