পুরান এবং নব গ্রহ – রাহু এবং কেতু

40

পুরান এবং নব গ্রহ – রাহু এবং কেতু

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শুরু করছি পুরান এবং নবগ্রহ পর্ব গুলির শেষ পর্ব|আজ আলোচনা করবো রাহু এবং

কেতু নিয়ে।

 

পুরান মতে রাহু ও কেতু আসলে ভিন্ন নয় তার একি শরীরের দুটি পৃথক অংশ অবশ্যই এই দুটি অংশের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও ভূমিকা আছে|অসুর স্বরভানু সমুদ্র মন্থন কালে অমৃত চুরি করে পান করেছিলো যা জানতে পেরে সূর্য ও চন্দ্র শ্রী বিষ্ণুকে সাবধান করেন এবং ফল স্বরূপ বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রের আঘাতে কাটা যায় অসুর স্বরভানুর মাথা|অমৃতের কয়েক বিন্দু পান করার ফলে কাটা মুন্ডু এবং ধর অমরত্ত্ব লাভ করে|ওই কাটা মুন্ডই রাহু এবং তার ধর কেতু নামে পরিচিত|এই দুই অংশ গ্রহ হিসেবে আবর্তিত হচ্ছে সৌর জগতে এবং নিদ্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তারা গ্রাস করে সূর্য ও চন্দ্র কে|প্রতিশোধ নেয় তাদের ধরিয়ে দেয়ার|

শুধু হিন্দু নয় বৌদ্ধ ধর্মেও রাহু কেতুর নিজস্ব স্থান রয়েছে|

 

বিভিন্ন শাস্ত্রে রাহু ও কেতুকে কে স্কন্দহীন সর্পিল এক দৈত্য হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে|আট টি কালো ঘোরা বিশিষ্ট রথে তারা সৌর জগৎ পরিক্রমা করেন|এদের প্রকৃত বাসস্থান পাতাল লোক|কোথাও কোথাও আবার কেতুর বাহন হিসেবে সিংহ কেও দেখানো হয়েছে|রাহুর রত্ন হিসেবে গোমেদ এবং কেতুর রত্ন হিসেবে ক্যাটস আই ব্যবহিত হয়|

 

জ্যোতিষ শাস্ত্রে পাপ গ্রহ বলতে প্রথমেই রাহু ও কেতুর কথা ওঠে|এখানে উল্লেখ করতে হয় নব গ্রহের বাকি গ্রহ গুলি মূলত দেবতা কিন্তু এই দুই গ্রহের অসুর সত্ত্বা রয়েছে|জ্যোতিষ শাস্ত্রে বহু আলোচিত কাল সর্প দোষ সৃষ্টি করে রাহু ও কেতু|রাহু ও কেতুর অবস্থান অনুসারে মোট বারো রকমের কাল স্বর্প দোষ রয়েছে|রাহু গ্রহন দোষেরও মুল কারিগর|রাহুর বা কেতুর নিজস্ব কোনো রাশি নেই তবে তবে রাহু ও কেতু যে রাশি তে অবস্থান করে সেই রাশির অধিপতির অবস্থার উপর রাহুর ও কেতুর প্রভাব অনেকটাই নির্ভর করে|সেক্ষেত্রে রাহু কেতুর দৃষ্টি, তাদের অবস্থান বা দশা অন্তরদশা কোন জাতক জাতিকার জন্য শুভ এবং কোন জাতক জাতিকার জন্য অশুভ তা জন্মছক খুঁটিয়ে দেখে তবেই বলা সম্ভব|

 

বহু মানুষ অযথা আতংকিত হন ভয় পান এই দুই দুষ্ট গ্রহের নাম শুনলে|তবে আমি বলবো রাহু ও কেতুকে অযথা ভয় পাওয়ার কারন নেই|তামসিক প্রবৃত্তির হলেও এরা সব সময় অশুভ নয়।কখনো কখনো অত্যন্ত শুভ হয়েও দেখা দেয় জীবনে।

 

পরের পর্বে আবার এক নতুন শাস্ত্রীয় এবং পৌরাণিক বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করবো।

থাকবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।