কালী কথা – দেবী নগরের কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
কালী কথায় আজ জানাবো উত্তর দিনাজপুরের
রায় গঞ্জে অবস্থিত শতাধিক বছরের পুরনো
দেবীনগর কালীবাড়ির কথা।
এই কালী মন্দির প্রসঙ্গে আছে বহু অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ ।
ঠিক কবে এবং কে এই পূজা প্রচলন করেন তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও পূজার বয়স শতাধিক সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অতীতে কোনো এক সময়ে জঙ্গলে ঘেরা এই মন্দিরে পুজো করতো এলাকার দুর্ধর্ষ ডাকাতরা।পরবর্তীতে দিনাজপুরের জমিদার স্যার গিরিজানাথ রায় বাহাদুর এই পূজার দেখভাল শুরু করেন।
তিনি প্রতি বছর দিনাজপুর থেকে এসে এখানে পুজো করতেন।পরবর্তীতে জমিদার পরিবার থেকে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। বর্তমানে এই ট্রাস্টি বোর্ড সব ট্র্যাডিশন মেনে আজও নিষ্ঠা সহকারে পূজা চালিয়ে যাচ্ছে।
শোনা যায় একবার স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি
ভূপালচন্দ্র রায়চৌধুরির গাড়ি ঝড় জলের রাতে এই মন্দিরের সামনে এসে খারাপ হয়ে পড়ে।
এই অঞ্চল তখন দুর্গম এবং বিপদসংকুল । আর কোনো উপায় না দেখে তিনি দেবীর কাছে নিজের উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেন।দেবীর আশিসে গাড়ি ঠিক হয়ে যায়। পরদিন দেবী তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন মন্দিরের চারপাশে ঘিরে দেবার জন্য। তারপর তিনি মন্দিরের পাশে প্রাচীর তুলে দেন।
এখানে জমিদার বাড়ির প্রচলিত নিয়ম মেনে কালীপূজার দিন সূর্যাস্তের পর মূর্তি গড়ে, সেই মূর্তিতেই পূজা করে সূর্যোদয়ের আগেই বিসর্জন দেওয়া হয়।বিশেষ বিশেষ তিথিতে পশুবলিও হয়ে থাকে।তবে তা হয় পূজার পরে।
কারণ দিনাজপুরের জমিদাররা ছিলেন বৈষ্ণব তাঁরা বলি দিতেন না। মধ্য রাতে পশুবলি দিত ডাকাতেরা। সেই পরম্পরা মেনেই এই রীতি পালন হয়।মায়ের মন্দিরে কোন ছাদ নেই। খোলা আকাশের নীচে মায়ের স্থান।
দেবী নগর কালী বাড়ির কালী বহু মানুষের কাছে
পরম দয়াময়ী। ভক্তদের সব বাসনা তিনি পূরণ করেন।তাই প্রতি অমাবস্যায় তার কাছে ছুটে আসেন বহু দর্শণার্থী।
আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে শুরু করেছি কালী কথা। আবার পরের পর্বে এমনই এক ঐতিহাসিক কালী মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে
ফিরে আসবো।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।