গুরু কথা – মহাবতার বাবাজি
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
সাধনার জোরে অমরত্ত্ব লাভ করেছেন এমন নজির খুব কমই আছে জগতে। মহাবতার বাবাজি এমনই একজন সিদ্ধ যোগী।আজকের গুরু কথার এই পর্বে ভারতের এই অন্যতম রহস্যময় এবং মহানতম যোগী পুরুষ মহাবতার বাবাজির অলৌকিক জীবন এবং সাধনা নিয়ে লিখবো।
মহাবতার বাবাজিকে বলা হয় গুরুদের গুরু বা জগৎ গুরু|ক্রিয়া যোগের তিনি প্রান পুরুষ|ধ্যান, আধ্যাত্মিকতা এবং যোগাসন কে তিনি এক সূত্রে গেথেছেন কয়েক হাজার বছর আগে|পরবর্তীতে তার পথ অনুসরণ করে আধ্যাত্মিক পথে এগিয়েছেন তার সুযোগ্য শিষ্যরা যার মধ্যে শ্যামাচরণ লাহিড়ী, যুক্তেশ্বর গিরি, পরমহংস যোগানন্দ প্রমুখ।
মহাবতার বাবাজি কে নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য গল্প, কিংবদন্তি এবং রহস্য|কেউ কেউ মনে করেন ক্রিয়া যোগের মাধ্যমে তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন|কঠোর সাধনার মাধ্যমে তিনি সময় কে জয় করে জন্ম মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেছেন এবং আশ্চর্য জনক ভাবে হাজার হাজার বছর ধরে স্বশরীরে বিরাজ করছেন এই পৃথিবীতে| একাধিক বার তার সাক্ষাৎ লাভ করে ধন্য হয়েছেন একাধিক সাধক|শোনা যায় হিমালয়ের এক দুর্গম স্থানে শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয় কে দীক্ষা দিয়েছিলেন স্বয়ং মহাবতার বাবাজি|পরমহংস যোগানন্দ তার ” অটো বায়োগ্রাফি অফ এ যোগী ” বইয়ে তার মহাবতার বাবাজির দর্শনের কথা বলেছেন|একাধিক বার সামনে এসেছে হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলে তার রহস্যময় উপস্থিতির কথা|
বাবাজির জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না তবে মনে করা হয় তামিলনাড়ুর কোনো গ্রামে তার জন্ম হয়েছিলো, তার সঠিক বয়স নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে|কারুর মতে 5000 তো কারুর মতে 2000 বছরের কিছু বেশি তার বয়স|যোগ বলে তিনি তারুণ্য কে ধরে রেখেছেন তাই দেখলে মনে হয় এক যুবক|বাবাজির ইচ্ছে না থাকলে তাকে দর্শন করা যায়না|তিনি ঝড়ের গতিতে প্রকট হন আবার মহাশূন্যে মিলিয়ে যান|একটি প্রচলিত বিশ্বাস মতে হিমালয়ের কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে রয়েছে জ্ঞানগঞ্জ নামে এক রহস্যময় মঠ, যেখানে সিদ্ধ পুরুষ ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারেনা, বাবাজির সেই মঠেই থাকেন, শুধু তাই নয় তিনি জ্ঞান গঞ্জের আচার্য|সুক্ষ দেহে তিনি সর্বত্র বিচরণ করেন আবার প্রয়োজন হলে নিজ দেহ ধারন করে প্রকট হন, তবে তার দর্শন করে অতি দুর্লভ ঘটনা, এবং সৌভাগ্যর হাতে গোনা কয়েকজন আজ অবধি তার দর্শন করতে পেরেছেন|
বর্তমানে হিমালয়ের দুর্গম এক স্থানে অবস্থিত একটি গুহাকে মহাবতার বাবাজির গুহা হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়েছে। শোনা যায় এটি তার সাধনার স্থল এবং এখানে তিনি মাঝে মাঝে আসতেন। আজ বহু মানুষ এই দুর্গম পথ পেরিয়ে আসেন বাবাজির এই গুহা দর্শন করতে এবং তাদের কাছে এই স্থান অতি পবিত্র এক মন্দির স্বরূপ।
গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী পর্ব গুলিতে
এরকম রহস্যময় সাধক দের জীবন এবং সাধনা সম্পর্কে নানা তথ্য আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।