কালী কথা – দেবী চৌধুরানীর কালী পুজো

70

কালী কথা – দেবী চৌধুরানীর কালী পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বাংলা সাহিত্য তথা বাংলার ইতিহাসের এক বর্ণময় চরিত্র দেবী চৌধুরানী এবং ভবানী পাঠক। ভবানী পাঠক দস্যু হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন দেশপ্রেমিক এবং কালী সাধক। তার সুযোগ্য শিস্যা দেবী চৌধুরানীও কালী পুজো করতেন। আজ এই দেবী চৌধুরানীর কালী পুজো নিয়ে কালী কথায় আলোচনা করবো।

 

জলপাইগুড়ি ছিলো দেবী চৌধুরানীর কর্ম ভূমি। ত্রিশ্রোতা বা তিস্তা দিয়েই তিনি নিজ বজরায় যাতায়াত করতেন।জলপাইগুড়ির গোশালা মোড়ের কাছে দেবী চৌধুরানির শ্মশান কালীর মন্দিরটি রয়েছে।কথিত আছে, এই মন্দিরে শ্মশান কালী মায়ের পুজো দিয়ে অভিযানে অর্থাৎ ডাকাতির উদ্দেশে বেরোতেন দেবী চৌধুরানি

সঙ্গী থাকতেন ভবানী পাঠক এবং দলের বাকিরা।

 

এই মন্দিরের প্রথম পুরোহিত ছিলেন ভবানী পাঠক।ভবানী পাঠকের পরে এই মন্দিরের পুরোহিতের তালিকায় নাম উল্লেখ আছে- নয়ন কাপালিকের। শোনা যায় সেই সময় কালী পুজোয় নরবলী হতো তারপর ১৮৯০ সালে নরবলি দেওয়ার অভিযোগে নয়ন কাপালিকের প্রাণদণ্ড হয়। তার পর থেকেই এই মন্দিরে বন্ধ হয়ে যায় নরবলি প্রথা।কালীপুজোর রাতে আজও পশু

বলি হয়ে আসছে দেবী চৌধুরানি কালী মন্দিরে।

 

শুরু থেকেই শোল এবং বোয়ালের ভোগ দিয়ে মায়ের পুজো হয় দেবী চৌধুরানী কালী মন্দিরে। শোল এবং বোয়াল মাছ নাকি নিজেও পছন্দ করতেন দেবী চৌধুরানী।বিশেষ করে তিস্তা নদীর বোয়াল মাছও ছিল তাঁর পছন্দের তাই দেবী চৌধুরানীর পছন্দের সেই শোল বোয়াল মাছ দিয়ে আজও ভোগ নিবেদন হয়।

 

শোনা যায় কিছুকাল আগেও ঘন জঙ্গল প্রাচীন বট পাকুড়ে ঘেরা নিস্তব্ধ মন্দির প্রাঙ্গনে প্রবেশ করলেই গা ছম ছম করে উঠতো।

 

এখন নিত্যপুজোর পাশাপাশি কালীপুজোর রাতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। বহু মানুষ সেই পুজো দেখতে আসেন।

 

আগামী পর্বে বাংলার আরো একটি প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক কালী নিয়ে আলোচনা করবো।

চলতে থাকবে কালী কথা। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।