কালী কথা – সংগ্রাম পুরের কালী পুজো 

99

কালী কথা – সংগ্রাম পুরের কালী পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বসিরহাটের সংগ্রামপুরে রয়েছে এক  ছশো বছরের পুরনো ঐতিহাসিক কালীমন্দির যে মন্দিরের এক কিলোমিটারের মধ্যে অন্য কোনও কালীপুজো হয় না।আজ কালী কথায় এই সংগ্রামপুরের কালী মন্দিরের কথা লিখবো।

 

বাংলার আরো অনেক ঐতিহাসিক মন্দিরের

ন্যায় এই কালী মন্দিরের সাথেও জড়িয়ে আছে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নাম।রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির নির্মাণের জন্য জায়গা দান করেন। এরপর কৃষ্ণচন্দ্র দে এবং গ্রামবাসীদের উদ্যোগে এই কালী মন্দির স্থাপিত হয়।শুরুতে ছিল একটা খড়ের চাল দেওয়া মন্দির। তারপর ভক্তদের দানে ও মন্দিরের উন্নয়ন কমিটির সৌজন্যে সুন্দর পাকা মন্দির নির্মাণ হয়।

 

মন্দিরে মা কালীর সামনে রাখা আছে একটি ঘট শোনা যায় এই ঘটকে অবলম্বন করেই এই মন্দির গড়ে ওঠে।পরে তৈরী হয় কালী মূর্তি তবে মন্দিরে মায়ের যে মূর্তিটা রয়েছে তা কী দিয়ে তৈরি

সেটা কেউ জানেন না এখনও। এমনকী কে মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন কবে প্রতিষ্ঠা হয় তাও এই মন্দিরের প্রবীণ পূজারিদের কাছে অজানা।

 

দেবী এখানে অত্যন্ত জাগ্রত এবং তিনি এই এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের মেয়ে। জনশ্রুতি আছে মন্দিরের পিছনে যে পুকুরটি আছে, সেই পুকুরে গভীর রাতে একটা ছোট্ট মেয়ে লাল শাড়ি পড়ে পুকুরে নেমে স্নান করে। গ্রামবাসীরা মনে করেন ওই ছোট্ট মেয়েটি আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং মা কালী। আর তাই গ্রামবাসীদের ধারণা, মা তাঁদের মধ্যেই থাকেন। এবং তাঁদের সব ইচ্ছেই পূরণ করেন।

 

কালী মা এখানে দক্ষিণা কালী রূপে বিরাজমান। মন্দিরে নিত্য পুজো হয় এবং ভোগও থাকে মায়ের জন্য প্রতিদিন। দেবীকে একেক দিন একেক রকম ভোগ নিবেদন করা হয়। যেমন লুচি, চিঁড়ে, ফল, খিচুড়ি,পায়েস ইত্যাদি। এমনকী আমিষ ভোগও দেওয়া হয় কোনও কোনও দিন। এবং যদি কোনওদিন পাঁঠা বলি দেন, তবে সেদিন মাকে বলির কাঁচা মাংস নিবেদন করা হয়।

 

পুজো হয় তন্ত্র মতে। ভাদ্র মাসে হয় ভদ্রা কালি পুজো,শ্যামা পুজোর রাতে হয় শ্যামা কালি পুজো।

শ্যামা পুজোর রাতেই ভিড় হয় সব থেকে বেশি। এই সময়ে প্রতিমার নতুন করে রঙ হয়। ছয়শো বছর ধরে চলে আসছে এই রীতি।মায়ের এই নব রুপ দেখতে বিরাট সংখ্যায় ভক্তরা জড়ো হন।

 

ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকবে কালী কথা। এখনো অনেক দেবী মন্দির নিয়ে আলোচনা

বাকি আছে। ফিরে আসবো

আগামী পর্বে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।