কালী কথা – বুড়া কালীর পুজো
পন্ডিতজী ভৃগুশ্রী জাতক
দক্ষিণ দিনাজপুরের শতাব্দী প্রাচীন কালী পুজোর মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট এলাকার বুড়া কালীর পুজো।আজকের কালী কথায় এই পুজো নিয়ে লিখবো।
লোক মুখে শোনা যায় কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইত। মন্দির ও বাজারের জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল।সেই সময় শুরু হয় এই পুজো।
শতাব্দী প্রাচীন পুজো হলেও এর সঠিক বয়স কত তা কেউ বলতে পারে না।তবে একটি অলৌকিক ঘটনার কথা শোনা যায়। জনশ্রুতি আছে এক সময় আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালী মাতার বিগ্রহ বা শিলা খন্ড। এক তান্ত্রিক সেই সময় ওই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো দেন। তারপর থেকেই শুরু পুজোর।
একটা সময় নাকি কলকাতার রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন কলকাতায়।
প্রথম দিকে টিনের ঘেরা দিয়ে বুড়া কালী মাতার পুজো শুরু হয়। বর্তমানে বিশাল আকার মন্দিরের পুজিত হন বুড়া কালী। পুজোর দিন মায়ের মূর্তিতে সারা গায়ে সোনা থেকে রুপোর অলঙ্কারে সুসজ্জিত থাকে।
জনশ্রুতি আছে আগে নাকি কুড়ি কিলো ওজনের শোল মাছ বলি দেওয়া হত। এই পুজোকে ঘিরে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর নয় সমগ্র উত্তর বঙ্গের মানুষ এই পুজোয় অংশ নেন।
আজও বুড়াকালীকে নিয়ে নানারকম জনশ্রুতি আছে সন্ধ্যের পর নাকি অপরূপ ফুলের সুগন্ধি পাওয়া যায় এই এলাকা থেকে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও জঙ্গল বা গাছপালা ছিল না।অতীতে গভীর রাতে শোনা যেত নুপুরের আওয়াজ। সব মিলিয়ে জেলাবাসীর অগাধ বিশ্বাস বুড়া কালীর উপর।
কালী পুজোর দিন এই পুজোকে ঘিরে দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পরার মতো। এছাড়াও, প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার বুড়া কালীবাড়িতে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পরে ভক্তদের।
কালী কথা নিয়ে পরবর্তী পর্বে আবার ফিরে আসবো। সঙ্গে থাকুন। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।