এই মাত্র কিছু দিন আগেই ঘুরে এলাম বৃন্দাবন থেকে যদিও বলতেই মনে আসে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রধান মন্দির গুলি, রাধা কৃষ্ণের স্মৃতি বিজড়িত স্থান গুলি, নিধী বনের রাশ লীলা, ইত্যাদি তবে এতো কিছুর মাঝে, এই বৃন্দাবনের পবিত্র ভূমিতেই রয়েছে ৫১ শক্তি পীঠের অন্যতম শক্তিপীঠ যার নাম কাত্যায়নী। আজকের পর্বে এই শক্তি পীঠ নিয়ে লিখবো।
শক্তিপীঠটি কাত্যায়নী নামে বেশি পরিচিত হলেও দেবী এখানে উমা বা যোগমায়া নামেও পূজিতা হন এবং দেবীর ভৈরব হিসেবে এই স্থানে পূজিত হন ভূতেশ।
সতীর দেহের কোন অংশ বৃন্দাবনের এই বিশেষ স্থানে পতিত হয়েছিলো তা নিয়ে বিভিন্ন শাস্ত্রে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। একটি মত অনুসারে এখানে দেবী সতীর কেশ রাশি পড়েছিলো আবার অন্য একটি মত অনুসারে অনুসারে এই স্থানে পড়েছিলো দেবীর আংটি।
বর্তমানে রঙ্গনাথ মন্দিরের কাছে রাধাবাগে শক্তি পীঠ কাত্যায়নী অবস্থিত এবং দেবীর ভৈরব ভূতেশ বৃন্দাবনের ভূতেশ্বর রোডের কাছে ভূতেশ্বর মহাদেব মন্দিরে পূজিত হয়ে থাকেন।
প্রাচীন কালে কবে কে কিভাবে এই শক্তিপীঠ আবিস্কার করেন তার কোনো সঠিক এবং নিদ্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়না তবে ১৯২৩ সালে যোগীরাজ স্বামী কেশবানন্দ এই স্থানটি চিহ্নিত করেন এবং দেবী মন্দির তৈরী করেন।এই মন্দিরের অন্যতম দর্শনীয় বস্তু একটি বিশাল আকৃতির তলোয়ার আছে যাকে উচ্ছল চন্দ্রহাস বলে।
ভাগবত পুরাণে আছে যে ব্রজের গোপীগন
শ্রীকৃষ্ণ কে পতি রূপে পাওয়ার জন্য সারা মাঘ মাস জুড়ে কাত্যায়নী ব্রত পালন করেছিলেন।
সেই সময়ে তারা প্রতিদিন কাত্যায়নী শক্তি পীঠে
দেবীর পুজো করতে আসতেন এবং
নিজেদের মনোস্কামনা দেবীকে জানাতেন।
শাস্ত্র মতে কাত্যায়নী রূপ নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ তাই নবরাত্রির সময় এখানে বিশেষ পুজো হয় এবং বেশ বড়ো আকারে উৎসব হয়।ভক্ত রা বিশ্বাস করেন কাত্যায়নী রূপে দেবী উমার পূজা করলে ভয়, শোক, দুঃখ দূর হয়ে যায় তার পরিবর্তে শান্তি ও শক্তির সঞ্চার হয়। তাই এই স্থানে বহু ভক্তের সমাগম হয়।
আবার ফিরে আসবো আগামী পর্বে অন্য কোনো শক্তিপীঠের কথা ও তার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা
নিয়ে। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।