দূর্গা কথা – বাহিন জমিদার বাড়ির দূর্গাপুজো

83

বর্তমানে কলকাতার পাশাপাশি জেলা গুলিতেও বাড়ছে থিমের পূজোর রমরমা পিছিয়ে নেই উত্তর বঙ্গ তবে একসময়ে উত্তর বঙ্গে দুর্গাপুজো বলতে কয়েকটি জমিদার বাড়ির পুজোকেই বোঝাতো। সেক্ষেত্রে উত্তর দিনাজপুরের বাহিন
জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ছিলো অন্যতম পুজো।

অবিভক্ত বাংলাদেশের দিনাজপুরের জমিদার ছিলেন রুদ্র প্রতাপ চৌধুরীর বাহিন নামক অঞ্চল থেকেই মূলত তার বিশাল জমিদারি পরিচালিত হতো।স্থানীয় ” নাগর ” নদীর ধার ঘেঁষে ছিল জমিদারের অট্টালিকা।জমিদার বাড়ির পাশেই বানানো হয়েছিলো সিংহবাহিনী মন্দির।সেখানেই প্রতিবছর দুর্গাপুজো হতো। আজও হয়।

বাহিনদের পারিবারিক দূর্গাপুজো ঠিক কত পুরনো তা সঠিকভাবে জানা যায় না। অনুমান করা হয় জমিদার বাড়ি নির্মাণ করার পরেই সেখানকার ঠাকুরদালানে দুর্গাপুজো শুরু হয়।এক সময়ে বাহিন জমিদার বাড়ির দূর্গোৎসবে বসত যাত্রাপালার আসর, থিয়েটার, সার্কাস ও বিশাল মেলা এবং পূজোর কদিন প্রজাদের জন্য সাতদিন ধরে ভুড়িভোজ আর আমোদপ্রমোদের আয়োজন হতো।

আজও লোক মুখে শোনা যায় যে পূজোর সময়ে অতিথি দের অভ্যার্থনা জানাতে জমিদার বাড়ির সামনে বড় বাগানে বেশ কয়েকটি হাতি বাঁধা থাকত যা থেকে তাদের প্রতিপত্তি এবং বৈভব সহজেই অনুমান করা যায়।

যুগের সাথে সাথে সব কিছুতেই বদল এসেছে আগে সিংহবাহিনী মন্দির চণ্ডীপাঠ ও দুর্গাপুজো করতেন জনা তিনেক পুরোহিত। তবে এখন আর সেসব আড়ম্বর নেই। জমিদারবাড়ির জৌলুসের সঙ্গে সেসব কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে।এখন বাহিন জমিদার বাড়ির দূর্গাপুজো তথাকথিত
পারিবারিক পুজো থেকে বারোয়ারী পূজোর রূপ নিয়েছে কারন সব এলাকা বাসি একত্রিত হয়ে এই শতাব্দী প্রাচীন দূর্গা পূজোর আয়োজন করেন।

তবে সেই সব জমিদারি রীতি নীতি না থাকলেও আজও এই দূর্গা পূজোর ক্ষেত্রে নিষ্ঠা এবং ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দেয়া হয়।

চলতে থাকবে এই ধারাবাহিক আলোচনা।
আবার ফিরে আসবো এমনই কোনো বনেদি বাড়ির দূর্গা পুজোর কথা নিয়ে।
আগামী পর্বে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।