আজথেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে কাটোয়ায় ছিলো ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে ছিলো মালো জাতির বাস। পেশায় তারা ছিলো জেলে। এই জেলেদের সর্দার নরেন ক্ষেপা ছিলো কালী সাধক। তিনি স্বপ্নে দেখে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করেন এক কালী মূর্তি। সেই মূর্তি স্থাপিত হয় জঙ্গলে। নরেন ক্ষেপার সেই কালী মা পরবর্তীতে ক্ষেপী কালী নামেই প্রসিদ্ধ হয়।কাটোয়ার ক্ষেপী মায়ের মন্দির যে স্থানে আছে সেই স্থান গঙ্গার ঘাট থেকে পাঁচশো মিটার দূরে অবস্থিত।স্থানটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম কারন এই স্থানেই কেশবভারতীর কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন চৈতন্য দেব। সেই সময়ে এই স্থানে বৈষ্ণব প্রাধান্য ছিলো লক্ষ্যনীয়। তবুও নরেন ক্ষেপার কালী পুজো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।দেবীর ক্ষেপীমা নামের দুটি ব্যাখ্যা আছে। প্রথমত নরেন ক্ষেপা এলাকায় ক্ষেপা নামেই পরিচিত ছিলো অনেকে মনে করেন ক্ষেপা ছেলের মা মা হিসাবে দেবীর ক্ষেপী মা নাম হয়। আবার অনেকে বলেন। কোনো এক সময়ে এক তন্ত্র সাধিকা এখানে মায়ের সাধনা করতেন। তিনি ক্ষেপী নামে এলাকায় সুপরিচিত ছিলেন। তার নাম থেকেই দেবীকে ক্ষেপী নামে ডাকার সূচনা হয়।এখানে পূজোর একটি প্রাচীন এবং অদ্ভুত রীতি আছে।এখানে মালোদের স্পর্শ ছাড়া পুজো পক্রিয়া শুরু হয়না। প্রতি পূজোর আগে মালো জাতির লোকেরা এসে দেবীকে বেদিতে স্থাপন করেন। এবং কিছু শাস্ত্রীয় উপাচারের পর শুরু হয় পুজো।শোনা যায় ক্ষেপিমার কাছে কিছু চাইলে খালি হতে ফেরত যেতে হয়না।ভক্তদের এমনই বিশ্বাস ক্ষেপী মায়ের প্রতি । মায়ের অগণিত ভক্তরা মাকে সাজিয়েছে সাড়ে তিন কেজির বেশি সোনার গয়নায়। কৌশিকী অমাবস্যায় ভোর চারটে থেকে শুরু হয় পুজো। মঙ্গল আরতি দিয়ে ক্ষেপি মাকে আহ্বান করে। ক্ষেপি মা-র দর্শনে দিনরাত ভক্তদের সমাগম হয়।আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে চলতে থাকবে ধারাবাহিক কালী কথা।ফিরে আসবো এমনই কোনো ঐতিহাসিক পুজোর কথা নিয়ে।থাকবে বহু অলৌকিক ঘটনা।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।