বিশেষ পর্ব – শিবধাম কৈলাশ রহস্য

199

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

শাস্ত্রে কৈলাস পর্বতকে শিবের ‘লীলাধাম’ বলা হয়েছে কারন শিব এবং তার সহধর্মিনী দুর্গা ও কার্তিক গণেশ সহ শিবের সকল অনুসারী ভক্তরা কৈলাসে বাস করেন|আজকের পর্বে এই কৈলাশপর্বত সম্পর্কে কিছু অজানা কথা কিছু রহস্যময় তথ্য আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।প্রতি বছর বহু মানুষ মানস সরোবর যাত্রা করেন। তবে কৈলাস পর্বতের শৃঙ্গে এখনও পর্যন্ত কেউ উঠতে পারেননি। একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টের পর যাওয়া সেখানে নিষিদ্ধ। ঠিক পিরামিডের আকারের এই পাহাড়ে অনেক প্রাচীন গুম্ফা ও গুহা রয়েছে। যেখানে দেখা মিলতে পারে বৌদ্ধ ও হিন্দু সন্ন্যাসীদের। এই সন্ন্যাসীরা লোকচক্ষুর আড়ালে বহু বছর ধরে তপস্যা করে চলেছেন।তিব্বত মালভূমি থেকে প্রায় কুড়ি হাজার ফুটের বেশি ওপরে অবস্থিত কৈলাস হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বৌদ্ধদের কাছেও অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান|কৈলাস পর্বতকেই পৃথিবীর কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে।অনেকে বলে থাকেন কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পরে হঠাত্‍ করে চুল ও নখ বেশ কিছুটা বড় হয়ে যায়। আবার কথিত আছে, একবার কয়েকজন সাইবেরিয়ান পর্বতারোহী কৈলাস পর্বতের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বয়স কয়েক দশক বেড়ে যায় এবং এর এক বছর পরেই বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হয় তাঁদের|এসবই অবশ্য প্রচলিত জনশ্রুতি বা কিংবদন্তী|একটি ব্যাখ্যা অনুসারে সময়ের ধরা বাঁধা গন্ডির বাইরে অবস্থিত এই পর্বত তাই এখানে নিদ্দিষ্ট এরিয়ার বাইরে নিষিদ্ধ জায়গায় যাওয়া মানে টাইম মেশিনে চড়ে অন্য সময়ে গিয়ে পড়া। তাই এই সব হয়।তিব্বতি লোককথা অনুযায়ী, মিলারেপা নামে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী একবার কৈলাস পর্বতের শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন যে ঈশ্বরের বাসস্থানে না যাওয়াই ভালো। মানস সরবোর ছাড়াও কৈলাস পর্বতের নীচে রয়েছে আরও একটি অপরূপ সুন্দর হৃদ রাক্ষস তাল।প্রায় পনেরো হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মানস সরোবর বিশ্বের উচ্চতম মিষ্টি জলের হৃদ। আরও একটি আশ্চর্যের বিষয় যত জোরেই হাওয়া থাকুক এই মানস সরোবরের জল সবসময়ই শান্ত কিন্তু রাক্ষসতালের জল সব সময় অশান্ত থাকে। বিখ্যাত এক রাশিয়ান চিত্রকার বহুকাল এই অঞ্চলে কাটিয়ে তার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছিলেন, তার কথায় কৈলাসের আসেপাশে শাম্বালা নামের একটি রহস্যময় রাজ্য আছে। সেখানে শুধু উচ্চ কোটির তপস্যিরা বসবাস করেন|এই শাম্বালাই অনেকের মতে জ্ঞান গঞ্জ যার কথা আগেই আপনাদের বলেছি।বেশ কিছু বছর আগে আরো একটি রাশিয়ান অভিযাত্রী দল কৈলাশ অভিযানে গেছিলো তারা ফিরে এসে জানায় যে কৈলাশ সম্ভবত একটি বড় পিরামিড যাকে অনেক ছোট ছোট পিরামিড ঘিরে আছে আর সেখানে বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটে।সেই অভিযাত্রী দলের নেতা এর্নেস্ট নিজের ডাইরি তে লিখেছিলেন যে রাতের নিশ্তব্দতায় পাহাড়ের ভিতর থেকে একটি আজব ফিসফিস এর শব্দ আসে। একবার নয় বহু বার এমন অভিযান হয়েছে এবং সবাই স্বীকার করেছেন যে কৈলাস পর্বতের চারিদিকে একটি অপার্থিব এবং অলৌকিক শক্তির স্রোত বয়ে চলে|যেখানে বাস করেন স্বয়ং মহাদেব সেই স্থান ঘিরে রহস্য ও অলৌকিক ঘটনা ঘটবে সেটাই স্বাভাবিক।ফিরে আসবো আগামী পর্বে থাকবে এমনই কোনো অলৌকিক ও রহস্যময় বিষয় নিয়ে আলোচনা।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।