দেবী মাহাত্ম বা মন্দির রহস্য পর্বে যতগুলি মন্দির বা প্রাচীন পুজো নিয়ে আলোচনা করেছি তার অনেকগুলিই স্বপ্নাদৃষ্ট বা স্বপ্নে দেখা দেবীর আদেশ এবং নির্দেশ অনুসারে তৈরী হয়েছে।শাস্ত্রে দেবী কালীর দর্শন দেয়া কে নানা ভাবে ব্যাখ্যা করা।যদি স্বপ্নে কালীর মূর্তি দেখা যায় তাহলে স্বপ্নকে খুব ভালো স্বপ্ন বলে মনে করা হয়। যিনি এই স্বপ্ন দেখবেন জীবনে সুখ এবং সমৃদ্ধি থাকবে।তার পরিবারে সুখ বৃদ্ধি পাবে। মনে করা হয় যিনি স্বপ্নে দেবীকে দেখেন তার উপর দেবীর বিশেষ কৃপা আছে। আজকের পর্বে বর্ধমানের এক প্রাচিন রক্ষা কালীর পুজোর কথা জানাবো এবং এই পুজোর সাথেও স্বপ্নের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।আজ থেকে প্রায় দুশো বছরের আগের কথাবর্ধমানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন কলেরা প্রকোপে প্রায় জন শুন্য হয়ে পড়েছে। সেই সময়ে বর্ধমানের এক প্রত্যন্ত গ্রামের এক রাখাল বালক জঙ্গলে গরু চরাতে গিয়ে কিশোরী রূপে মায়ের দর্শন পান। সেদিন রাতে স্বপ্নাদেশ পায় ওই কিশোর সেই কিশোরী রূপেই মা কালী তাকে দর্শন দিয়ে শীঘ্রই গ্রামে তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পূজা করার আদেশ দেন।মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে সে গ্রামের এক ছোট্ট মাটির কুটিরে মায়ের পুজো শুরু করে গ্রামে মায়ের পুজো শুরু হতেই মহামারী থেকে রক্ষা পায় গ্রাম। মনে করা হয় মহামারি থেকে গ্রামের মানুষ কে রক্ষা করেছিলেন বলেই এখানে মা রক্ষা কালী রূপে পূজিত হন।বহু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী এই প্রাচীন রক্ষা কালী মন্দির। শোনা যায় একসময় যে জলাশয় থেকে মায়ের জল আনা হত সেটি খরার কারণে জল শূন্য হয়ে পড়ে। তারপর গ্রামবাসীরা একটি বিরাট জলাশয় খনন করেন তবে সেখান থেকে এক ফোঁটাও জল পাওয়া যায়নি। আবার এক গ্রামবাসীর স্বপ্নে দেখা দেন মা কালী মা তাকে রাত্রির নিদিষ্ট একটি সময়ে খনন করা জলাশয়ের নিদ্দিষ্ট একটি স্থানে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয় এবং পরদিন জলাশয়টি জলে পরিপূর্ণ অবস্থায় দেখা যায়।এমন বহু প্রচলিত জনশ্রুতি এই অঞ্চলের মানুষের মুখে আজও শোনা যায়। দেবী রক্ষা কালীর প্রতি সবারই অগাধ আস্থা এবং শ্রদ্ধা।তাই তার কাছে পুজো দিতে এবং মনোস্কামনা জানতে আসেন অসংখ্য মানুষ।সামনেই জগন্নাথদেবের স্নান যাত্রা তারপর অম্বুবাচি। সব মিলিয়ে আধ্যাত্মিক ভাবে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে আরো নতুন নতুন বিষয় এবং তথ্য নিয়ে চলতে থাকবে এই বিশেষ পর্বগুলি। দেবী মাহাত্মর পরের পর্ব নিয়ে ফিরে আসবো যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।