দেবী মাহাত্ম – বালুরঘাটের বুড়া কালীমাতা

53

ফলহারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে আপাতত দেবী মাহাত্মা নিয়ে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়েছি। কারনদেবী মাহাত্ম শোনার ও বলার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।যারা শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খন্ডন করিয়ে প্রতিকার চান তাদের জন্যও এই তিথি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।আজ আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি আলোচনাআজকের পর্বে বালুরঘাটের বুড়া কালী মাতা।দক্ষিণ দিনাজপুরের শতাব্দী প্রাচীন কালী ক্ষেত্র গুলির মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাটের এই বুড়া কালীর পুজো।শোনা যায় কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইত। মন্দির ও বাজারের জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। সেই সময়ে দস্যু ও বন্যা প্রাণীরা শাসন করতো এই এলাকা শতাব্দী প্রাচীন পুজো হলেও এর সঠিক বয়স কত তা কেউ বলতে পারে না।জনশ্রুতি আছে এই কালী ক্ষেত্রর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালী মাতার বিগ্রহ যা মূলত একটি শিলা খন্ড। স্থানীয় এক ত্রান্তিক সেই সময় ওই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো শুরু করেন । তারপর থেকেই শুরু হয় বুড়া কালী পুজো।প্রথমে টিনের ঘেরা দিয়ে বুড়া কালী মাতার পুজো শুরু হলেও বর্তমানে বিশাল আকার মন্দিরের পুজিত হন বুড়া কালী মাতাশোনা যায় কলকাতার রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন কলকাতায়। যদিও তার কোনো প্রামান্য তথ্য প্রমান নেই। সবটাই জনশ্রুতি।বহু অলৌকিক অভিজ্ঞতাও নাকি হতো এখানেসন্ধ্যের পর নাকি অপরূপ ফুলের সুগন্ধি পাওয়া যেত এই এলাকা থেকে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও জঙ্গল বা গাছপালা ছিল না। শোনা যেত নুপুরের আওয়াজ।সব মিলিয়ে এই স্থান বেশমায়াবী এবং পরিবেশ বেশ রহস্য ময়।পুজোতে এখন শোল মাছ বলি হয়। জনশ্রুতি আছে আগে নাকি ২০ কিলো ওজনের শোল মাছ বলি দেওয়া হত। প্রতি অমাবস্যায় বড়ো করে পুজোর আয়োজন করা হয়।পুজোর দিন মায়ের মূর্তিতে সারা গায়ে সোনা থেকে রুপোর অলঙ্কারে সুসজ্জিত থাকে। পুজোকে ঘিরে পুজোর দিন কয়েক হাজার ভক্তগনের সমাগম হয় পুজো প্রাঙ্গনে।সমগ্র জেলার মানুষের কাছে বুড়া কালী মাতা খুব শ্রদ্ধার এবং জাগ্রত দেবী। তার কাছে মনোস্কামনা নিয়ে আসেন অসংখ্য মানুষ। দেবী বুড়া কালী কাউকে খালি হাতে ফেরাননা বলে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে।চলতে থাকবে দেবী মাহাত্ম নিয়ে আলোচনা। পাশাপাশি মন্দির রহস্যর নতুন পর্ব নিয়েও ফিরে আসবো শিগ্রই। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।