দেবী কালীকে অনেক রূপেই পুজো করা হয়যার মধ্যে কিছু রূপ শাস্ত্র সম্মত ও পুরানে উল্লেখিত। আবার কিছু রূপ বা নাম লৌকিক ও হয় যার সাথে জড়িয়ে থাকে কিছু অলৌকিক ঘটনা বা জনশ্রুতি।আজ এমনই এক অদ্ভুত কালী মূর্তির কথা হবে। অবশ্য মূর্তি নয় মূর্তি গুলি বলা উচিৎ কারন।মন্দির একটিমাত্র কিন্তু ভিতরে মূর্তি তিনটি।দেবীকে ট্যাবা কালী বলেই জানে সবাই ।বীরভূমের ঐতিহ্যপূর্ণ কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম লাভপুরের এই দোনাইপুরের ট্যাবা কালী। পুজোর বয়স প্রায় ২৫০ বছর।সবচেয়ে উঁচু দেবী মূর্তিটির উচ্চতা ২৬ ফুট। শোনা যায় এক কালে শিশুদের ট্যাবা নামক এক রোগ হতো এবং এই অঞ্চলে সেই রোগের প্রকোপ , ছিলো বেশি তার নিরাময়ে এই মন্দির থেকে কবচ সংগ্রহ করে পরিয়ে দেয়া হতো এবং তাতেই রোগ নিরাময় হতো বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের।সেই থেকে নাম ট্যাবা কালী।স্থানীয়দের মুখে শোনা যায় প্রায় আড়াইশোবছর আগে লাভপুরের জমিদার বংশ এইগ্রামে মা কালীর পুজো শুরু করেন।পরবর্তী কালে দোনাইপুরের পাঠকদের হাতে ওঠে। পূজোর ভার।পাঠক বংশের আদি পুরুষরা ছিলেন তান্ত্রিক। কথিত রয়েছে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দিরে ‘ট্যাবা কালী’ মূর্তির প্রতিষ্ঠা করা হয়।তিনটি মূর্তির মধ্যিখানে থাকেন বড়মা, তাঁর উচ্চতাই ২৬ ফুট। বাঁ দিকে থাকেন ট্যাবা কালী। ডান দিকে রয়েছেন মা বিশ্বেশরী।এই দুইমূর্তির উচ্চতা ১২ ফুট করে।জন শ্রুতি আছে যে প্রথম যিনি পুজো প্রথম শুরু করেন,তিনি চোখে দেখতে পেতেন না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় কালীপুজোর দিন তিনি সমস্ত কিছু স্পষ্ট ভাবেই দেখতে পেতেন।প্রতি বছর কালীপুজোর রাতে তিনজন তান্ত্রিক এবং তিনজন পুরোহিত পুজো করেন। বিসর্জনের দিন পুজো চলাকালীন মায়ের কাছে দেওয়া আলতা ও সিঁদুর নিয়ে গ্রামের সকলে মাখেন। তার পর মন্দির লাগোয়া পুকুরে এক সময়ে তিনটি মূর্তি বিসর্জন করা হয়।সামনেই ফল হারিণী অমাবস্যা।দেবী মাহাত্মবর্ণনা করার বা তার মহিমা প্রচার করার এইতো শ্রেষ্ঠ সময়।আবার ফিরে আসবো আগামী পর্বে। ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকবে দেবী মাহাত্ম ও মন্দির রহস্য নিয়ে আলোচনা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।