মন্দির রহস্য – ডোমজুড়ের নারনা কালী মন্দির

278

বাংলায় জাগ্রত এবং প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের অভাব নেই যার মধ্যে প্রায় সব গুলিতেই ফল হারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে বিশেষ পুজো বা মাতৃ আরাধনার ব্যবস্থা করা হয়। কারণ ফল হারিণী অমাবস্যা দেবীকে ভক্তি দ্বারা প্রসন্ন করে সহজেইপুন্য সঞ্চয় করা যায় এবং অশুভ গ্রহের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আজ এমনই এক প্রাচীন কালী মন্দিরের কথা বলবো যা নারনা কালী মন্দির নামে বিখ্যাত।নারনা কালী মন্দির রয়েছে হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের নারনা গ্রামে প্রায় ২৫০ বছর আগে স্থানীয় এক বাসিন্দা এই জঙ্গলঘেরা নারনা গ্রামের পুকুরে স্নান করতে নেমে একটি ঘট খুঁজে পেয়েছিলেন এবং অলৌকিক ভাবে সেই রাতেই স্বপ্নে তিনি দেবী কতৃক ঘট স্থাপন এবং পূজাশুরুর স্বপ্নাদেশ লাভ করেন । নির্দেশ মতো সেই বছর থেকে শুরু হয় ঘটপুজো। পরবর্তীতে তিনি দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি স্থাপন করেন এবং মন্দির সংস্কার করে পুজো শুরু করেন।নারনা কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুকুরকে ‘কালী পুকুর’ বলে থাকেন। এখানে জাল ফেলা, জলে নামা বা অন্য যে কোনও কাজকর্ম করা নিষিদ্ধ। কারণ, ভক্তদের বিশ্বাস এখানে প্রতিরাতে দেবী তাঁর সন্তানদের নিয়ে স্নান করেন।নিশুতি রাতে তাদের অলৌকিক উপস্থিতি অনেকেই উপলব্ধি করেছেন বলে শোনা যায়।পূজার সেই ঐতিহ্য আজও বয়ে নিয়ে চলেছেন নারনা গ্রামের বাসিন্দারা। নারনা কালী মন্দিরে নানা উপাচারের মধ্যে রয়েছে সকাল-সন্ধ্যায় দেবীর আরাধনা।সারা বছরই মন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তের আনাগোনা লেগেই থাকে। মনস্কামনা পূর্ণ হলে দেবীকে যথাযথ উপাচারে পূজা দিয়ে যান ভক্তরা।ফল হারিণী অমাবস্যায় বড়ো করে পূজোর আয়োজন হয়। হোম যজ্ঞ হয়।বিশেষ উৎসবে এই মন্দির প্রাঙ্গণে দুটি উনানে চলে ভোগরান্না। শোনা যায় এই মন্দিরে ভক্তসংখ্যা যতই হোক না-কেন, দেবীর আশীর্বাদে কোনওদিন আয়োজনে কমতি হয় না।ফল হারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে চলতে থাকবে দেবী মহাত্ম ও মন্দির রহস্য নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা। ফিরে আসবো পরের পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।