শিব কথা – বুড়ো শিব

294

বাংলায় শিবঠাকুরকে তার রূদ্র রূপ বা ধ্যানস্ত রূপের তুলনায় শান্ত সৌম্য রূপে বেশি দেখা যায়। কোথাও কোথাও আবার বুড়ো শিব বলেও সম্মোধন করা হয়। কিন্তু কেনো বুড়ো শিব?সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো আজকের পর্বে।জানবো এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শিব মন্দির সম্মন্ধে।শিবের একটি লৌকিক রূপ হলো এই বুড়ো শিব। এই রূপে তিনি সাধারণ মানুষের মতো বয়স বাড়ার কিছু চিন্হ বহন করেন। যেমন মেদ বহুল ভারী শরীর, গোফ এবং জটা ও দাড়িতে বয়সের ছাপ।উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহে আছে এক বুড়োশিব মন্দির যাঁর উৎপত্তির কাহিনি রীতিমতো অবাক করার মতোশোনা যায় এই বুড়োশিব স্বয়ম্ভূ। রাজা হোসেন শাহর আমলে এক ব্রাহ্মণ স্বপ্নে দেখেন যেমহাদেব তাঁকে বলছেন যে অনেকদিন গঙ্গার ধারে জঙ্গলের মধ্যে রয়েছি। এবার একটু সেবার ব্যবস্থা কর। পরদিন ওই ব্রাহ্মণ, গঙ্গাপারে গিয়ে দেখতে পান, সেখানে সত্যিই একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে। ব্রাহ্মণের মুখ থেকে এই কথা শোনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ওই শিবলিঙ্গ জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে ও তার পূজার ব্যবস্থা করে।ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন বড়লাট হেস্টিংসের কানে একবার পৌঁছল বুড়োশিবের সম্পর্কে নানা অলৌকিক কাহিনি। তিনি নিজেই গেলেন বুড়োশিবের মন্দিরে ভক্তদের বিশ্বাস ভাঙাতে। গিয়েই সঙ্গে উপস্থিত কর্মীদের নির্দেশ দিলেন এই পাথর বা শিবলিঙ্গ তুলে পাশের গঙ্গায় ফেলে দিতে।তার নির্দেশে শুরু হয় মাটি থেকে শিবলিঙ্গ তুলে ফেলার কাজ। কিন্তু, যতই খোঁড়াখুঁড়ি চলে, শিবলিঙ্গের তলের সন্ধান আর হেস্টিংসের লোকজন পান না। দিনভর খোঁড়ার শেষেও যখন শিবলিঙ্গের তল খুঁজে পাওয়া গেল না, তখন বড়লাট হেস্টিংসের ভুল ভাঙল। তিনি এই হিন্দু দেবতার অলৌকিক ক্ষমতা দেখে অবাক হয়ে ফিরে গেলেন।বুড়ো শিবের মহিমা আরো বেশি প্রচারিত হলো সারা বাংলায়।বহু প্রাচীন এই মন্দিরের স্থাপনা কবে হয়েছিলো তার সঠিক দিন ক্ষণ পাওয়া যায়না তবে একাধিক বার সংস্কার করা হয়েছে এই মন্দির সে বিষয়ে নানা তথ্য রয়েছে।ফিরে আসবো শিব কথার পরবর্তী পর্ব নিয়ে।থাকবে আরো এক মন্দিরের কথা সঙ্গে শিব সংক্রান্ত নানা অজানা তথ্য। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।