মন্দির রহস্য – হিড়িম্বা মন্দির

293

যদিও মহাভারতে হিড়িম্বা কে এক রাক্ষসী হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু মানালির এক মন্দিরে উপাস্য দেবী ‘রাক্ষসী’ হিড়িম্বা।হিমালয়ের পাদদেশে, পাইন-দেবদারু ঘেরা সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে প্যাগোডা স্টাইলে নির্মিত এই হিড়িম্বা মন্দির বেশ রহস্যময়।

মহাভারত অনুসারে হিড়িম্বা দেবীর দাদা হিড়িম্ব ছিলেন রাক্ষস দের রাজা ।মাতা কুন্তির সঙ্গে যখন এই সেই জঙ্গলে আশ্রুয় নিয়েছিলেন পঞ্চপান্ডব।
তখন দাদার আদেশে সুন্দরী রমণীর বেশে পঞ্চপান্ডবকে বধ করতে যান হিড়িম্বা।পান্ডব দের অন্যতম সদস্য ভীমকে দেখে প্রথম দর্শনেই ভাল লেগে যায় হিড়িম্বার এবং তিনি ভীমকে বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

গোটা ঘটনা জানতে পেরে নিজের বোনকেই হিড়িম্ব হত্যা করতে উদ্যত হলে হিড়িম্বকে বধ করেন ভীম। এর পরেই কুন্তির আদেশে হিড়িম্বাকে বিয়ে করেন ভীম। শর্ত ছিল একটাই তাঁদের সন্তান হওয়ার পর হিড়িম্বাকে ত্যাগ করবেন ভীম। ভীম এবং হিড়িম্বার সন্তান হলো ঘটোৎকচ যার জন্মাবার পর ভীম সেখান থেকে চলে এলে মানালির ওই জঙ্গলেই পুত্রসন্তানকে নিয়ে গভীর তপস্যায় মগ্ন হন হিড়িম্বা। পরবর্তীতে হিড়িম্বা নিজের করে তোলেন ঘটোৎকচকে এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ঘটৎকচ অংশ নিয়ে ছিলেন।
 
মানালির এই হিড়িম্বা মন্দিরের ভিতর রয়েছে বিরাট এক কালো রঙের পাথর। লোকের বিশ্বাস ওই কালো পাথরের নিচেই ধ্যানে করেছিলেন হিড়িম্বা। কাঠের তৈরী মন্দির সাজানো রয়েছে বিভিন্ন পশুর শিঙ দিয়ে। রয়েছে এক বিশাল আয়তনের পায়ের ছাপ আছে এখানে যা স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুসারে স্বয়ং মা হিড়িম্বার।
স্থানীয়দের বিশ্বাস আজও হিড়িম্বা মা আপদে বিপদে রক্ষা করে চলেছেন তাঁদের। রক্ষা করছেন গোটা অঞ্চলকে।

প্রতিবছর নব রাত্রি উপলক্ষে যখন সারা দেশ মা দুর্গার পুজো করেন তখন মানালি মেতে ওঠে এক ‘রাক্ষসী’র আরাধনায়।তিনি তখন আর রাক্ষসী নন তিনি দেবী হিড়িম্বা।হিড়িম্বা মন্দিরের কাছেই আছে হিড়িম্বা এবং ভীমের সন্তান ঘটোৎকচের মন্দির।সেই মন্দির ও এখানকার অন্যতম ধর্মীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফিরে আসবো পরের পর্বে। অন্য কোনো মন্দির রহস্য নিয়ে।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।